ইসলামিক উপন্যাস। মহিয়সী নারী। পর্ব ৭।
ইসলামিক উপন্যাস। মহিয়সী নারী। পর্ব ৭।
বাবা মারা যাওয়ার পরে অনেকটা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলো নাজিফা- কিভাবে পড়াশুনার খরচ চলবে? মায়ের একার পক্ষে সংসার চালানো তো মুশকিল। পড়ার খরচ জোগানো তো দূরের কথা !! কিন্তু আমেনা বেগম নাজিফার চিন্তা দূর করে দিয়েছেন। সাহস ও উতসাহ দিয়ে বলেছেন - মা নাজিফা ! তোমার বাবা নেই তাতে কি হয়েছে? আমি তো আছি।তুমি একটুও মন ছোট করবে না। কখনো- নিজেকে অসহায় ভাববে না। তোমার বাবা থাকতে তুমি যেভাবে একনিস্টভাবে পড়াশুনা করেছো, আমি চাই তুমি এখনো সেইভাবেই একনিস্ট হয়ে পড়াশুনা করবে।
মাযহারুল ইসলামের কিছু আবাদি জমি ছিলো। সে জমিগুলো বর্গা দিয়েছেন আমেনা বেগম। ফসলের যে অংশটুকু পান তা থেকে সংসারের প্রয়োজন অনুযায়ী রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দেন। ফসল বিক্রির এ টাকা দিয়ে সংসারের অন্যান্য খরচ ও নাজিফার পড়াশুনার খরচ চালান। শামছুর রহমানও মাঝে মাঝে সাহাজ্য করেন। সব মিলিয়ে ভালই কাটছে আমেনা বেগম ও নাজিফার দিনকাল।মাযহারুল ইসলামের মৃত্যুর কারনে ও অভাবের মুখ দেখতে হয়নি তাদের।
বিছানায় শুয়ে আছে নাজিফা। ঘুমাবার চেস্টা করছে। কিন্তু ঘুম আসছেনা। কেন জানি আজ বারবার শুধু বাবার কথা মনে হচ্ছে। চোখ বন্ধ করলেই বাবার চিরচেনা মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
নাজিফার মনে যখনই বাবার স্মৃতি ভেসে উঠে তখনই নাজিফা কয়েকবার দরুদ শরীফ, সূরা ফাতেহা, সূতা ইখলাস ও সূরা ইয়াছিন পড়ে বাবার রুহের মাগফিরাতের জন্যে পাঠিয়ে দেয়। কারণ নাজিফা জানে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন, কবরে মৃত্যু ব্যক্তির অবস্থা এমন হয়, যেমন অথৈ পানিতে নিমজ্জিত সাহায্যপ্রার্থী ব্যক্তি। যে নিজেকে উদ্ধার করার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ডাকতে থাকে। তেমনিভাবে উক্ত মৃতব্যক্তি সর্বদা অপেক্ষা করতে থাকে যে, তার পিতা -মাতা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের পক্ষ থেকে তার মুক্তির জন্যে বা তার রুহের মাগফিরাতের জন্যে কোনো দোয়া ও ইস্তেগফার পৌছে কিনা। যখন তাদের পক্ষ থেকে কোনো দোয়া পৌছে তখন তা মৃতব্যক্তিকে দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যস্থিত সমগ্র জিনিষ হতে অধিক আনন্দ দান করে। আর দয়াময় মহান আল্লাহ্ তায়ালা দুনিয়া বাসীদের দোয়াকে পাহাড় পরিমান বৃদ্ধি করে এর সাওয়াব [বহুগুন বাড়িয়ে] কবরবাসীদের নিকট পৌছে দেন। তাই মৃতদের জন্যে জীবিতদের পক্ষ থেকে সর্বোত্তম উপঢৌকন হচ্ছে- তাদের জন্যে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করা। [মিশকাত শরীফ পৃস্টা :২০৫] তাই নাজিফা কান্নাকাটির মাধ্যমে করে সময় নস্ট না করে বাবার জন্যে দোয়াও ইস্তেগফার করে।
নিত্যদিনের অভ্যাস অনুযায়ী নাজিফা আজও বাবার রুহের মাগফিরাতের জন্যে দোয়া করলো। এরপর বাবাকে নিয়ে আশার প্রদীপ নামে একটি কবিতা লিখলো-
বাবা ছিলো মোর আশার প্রদীপ
হঠাত নিভে গেলো,
হঠাত করে জীবনে মোর
আধার নেমে এলো।
কোনো কিছু লাগেনা ভালো
মন বসে না কাজে,
বাবার বলা কথাগুলো
কানে যখন বাজে।
ক'দিন আগেও বাবা আমায়
ভাত খাওয়াত বসে,
আদর করে ঘুম পাড়াত
কাজের শেসে এসে।
পরম করুণাময় প্রভুর কাছে
এটাই আমার চাওয়া,
ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম যেন
হয়গো বাবার পাওয়া।
প্রিয় পাঠক, ৮ নম্বর পর্ব আগামীকাল ইনশাআল্লাহ আপনাদের মাঝে প্রকাশ করবো দোয়া করিবেন, মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে যেন সফলতা দান করেন, এবং আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে দ্বীনের খেদমতে কবুল করেন। আমীন ছুম্মা আমীন
-----------------------------------------------------------------------
সিরিজঃ মহীয়সী নারী। পার্ঠ (৭)
লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ মফীজুল ইসলাম
সংকলনেঃ আমি হাফেজ মুহাম্মাদ জিয়াউর রহমান
বাবা মারা যাওয়ার পরে অনেকটা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলো নাজিফা- কিভাবে পড়াশুনার খরচ চলবে? মায়ের একার পক্ষে সংসার চালানো তো মুশকিল। পড়ার খরচ জোগানো তো দূরের কথা !! কিন্তু আমেনা বেগম নাজিফার চিন্তা দূর করে দিয়েছেন। সাহস ও উতসাহ দিয়ে বলেছেন - মা নাজিফা ! তোমার বাবা নেই তাতে কি হয়েছে? আমি তো আছি।তুমি একটুও মন ছোট করবে না। কখনো- নিজেকে অসহায় ভাববে না। তোমার বাবা থাকতে তুমি যেভাবে একনিস্টভাবে পড়াশুনা করেছো, আমি চাই তুমি এখনো সেইভাবেই একনিস্ট হয়ে পড়াশুনা করবে।
মাযহারুল ইসলামের কিছু আবাদি জমি ছিলো। সে জমিগুলো বর্গা দিয়েছেন আমেনা বেগম। ফসলের যে অংশটুকু পান তা থেকে সংসারের প্রয়োজন অনুযায়ী রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দেন। ফসল বিক্রির এ টাকা দিয়ে সংসারের অন্যান্য খরচ ও নাজিফার পড়াশুনার খরচ চালান। শামছুর রহমানও মাঝে মাঝে সাহাজ্য করেন। সব মিলিয়ে ভালই কাটছে আমেনা বেগম ও নাজিফার দিনকাল।মাযহারুল ইসলামের মৃত্যুর কারনে ও অভাবের মুখ দেখতে হয়নি তাদের।
বিছানায় শুয়ে আছে নাজিফা। ঘুমাবার চেস্টা করছে। কিন্তু ঘুম আসছেনা। কেন জানি আজ বারবার শুধু বাবার কথা মনে হচ্ছে। চোখ বন্ধ করলেই বাবার চিরচেনা মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
নাজিফার মনে যখনই বাবার স্মৃতি ভেসে উঠে তখনই নাজিফা কয়েকবার দরুদ শরীফ, সূরা ফাতেহা, সূতা ইখলাস ও সূরা ইয়াছিন পড়ে বাবার রুহের মাগফিরাতের জন্যে পাঠিয়ে দেয়। কারণ নাজিফা জানে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন, কবরে মৃত্যু ব্যক্তির অবস্থা এমন হয়, যেমন অথৈ পানিতে নিমজ্জিত সাহায্যপ্রার্থী ব্যক্তি। যে নিজেকে উদ্ধার করার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ডাকতে থাকে। তেমনিভাবে উক্ত মৃতব্যক্তি সর্বদা অপেক্ষা করতে থাকে যে, তার পিতা -মাতা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের পক্ষ থেকে তার মুক্তির জন্যে বা তার রুহের মাগফিরাতের জন্যে কোনো দোয়া ও ইস্তেগফার পৌছে কিনা। যখন তাদের পক্ষ থেকে কোনো দোয়া পৌছে তখন তা মৃতব্যক্তিকে দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যস্থিত সমগ্র জিনিষ হতে অধিক আনন্দ দান করে। আর দয়াময় মহান আল্লাহ্ তায়ালা দুনিয়া বাসীদের দোয়াকে পাহাড় পরিমান বৃদ্ধি করে এর সাওয়াব [বহুগুন বাড়িয়ে] কবরবাসীদের নিকট পৌছে দেন। তাই মৃতদের জন্যে জীবিতদের পক্ষ থেকে সর্বোত্তম উপঢৌকন হচ্ছে- তাদের জন্যে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করা। [মিশকাত শরীফ পৃস্টা :২০৫] তাই নাজিফা কান্নাকাটির মাধ্যমে করে সময় নস্ট না করে বাবার জন্যে দোয়াও ইস্তেগফার করে।
নিত্যদিনের অভ্যাস অনুযায়ী নাজিফা আজও বাবার রুহের মাগফিরাতের জন্যে দোয়া করলো। এরপর বাবাকে নিয়ে আশার প্রদীপ নামে একটি কবিতা লিখলো-
বাবা ছিলো মোর আশার প্রদীপ
হঠাত নিভে গেলো,
হঠাত করে জীবনে মোর
আধার নেমে এলো।
কোনো কিছু লাগেনা ভালো
মন বসে না কাজে,
বাবার বলা কথাগুলো
কানে যখন বাজে।
ক'দিন আগেও বাবা আমায়
ভাত খাওয়াত বসে,
আদর করে ঘুম পাড়াত
কাজের শেসে এসে।
পরম করুণাময় প্রভুর কাছে
এটাই আমার চাওয়া,
ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম যেন
হয়গো বাবার পাওয়া।
প্রিয় পাঠক, ৮ নম্বর পর্ব আগামীকাল ইনশাআল্লাহ আপনাদের মাঝে প্রকাশ করবো দোয়া করিবেন, মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে যেন সফলতা দান করেন, এবং আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে দ্বীনের খেদমতে কবুল করেন। আমীন ছুম্মা আমীন
-----------------------------------------------------------------------
সিরিজঃ মহীয়সী নারী। পার্ঠ (৭)
লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ মফীজুল ইসলাম
সংকলনেঃ আমি হাফেজ মুহাম্মাদ জিয়াউর রহমান





No comments
Post a Comment