ads

স্বামী-স্ত্রীর আচরণের সৌন্দর্য। পর্ব ২

স্বামী-স্ত্রীর আচরণের সৌন্দর্য। পর্ব ২






স্ত্রীর সৌন্দর্য- স্ত্রী স্বামীর সংসারের প্রাণ। একজন মহিলা নিজেই নিজের ভাল স্বামী পছন্দ করার অধিকার রাখেন। তাছাড়া তার মা-বাবা এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজনও এ ব্যাপারে প্রাণপ্রণ চেষ্টা করেন। বিয়ের পরে আপনি একজন পুরুষের স্ত্রী হলেন, আর তিনি হলেন আপনার স্বামী। স্বামীর কাছে একজন স্ত্রীর হওয়া চাই গুণবতী, হওয়া চাই স্বামীর মনের মত। স্বামীর প্রিয়তমা। কিন্তু কিভাবে হবেন সেরকম? হ্যা, ইসলামী শরীয়তে সবদিক দিয়ে সুন্দর স্ত্রী হবার সুন্দর উপায় আছে। আর তা হলো- ০১ - আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে একজন স্বামী দান করেছেন, সে জন্যে আল্লাহর শোকর আদায় করুন। ০২ - স্বামীকে বুঝুন। স্বামীর মন - মানসিকতা, স্বাভাব, প্রকৃতি, যোগ্যতা, গুণাবলী, সামাজিক মর্যাদা উপলব্ধি করুন এবং সেভাবে তাকে গ্রহণ করুন। স্বামীকে শ্রদ্ধা করুন। ০৩ - স্বামীকে হৃদয়ের গভীরে অন্তরের অন্তরস্থলে স্থান দিন। তাকে প্রান করে ভালবাসুন, হৃদয় উজার করে ভালবাসুন। ০৪ - স্বামীর সাথে হাসি খুশি মনে কথা বলুন। ০৫ - স্বামীর কাছে মনের কথা খুলে বলুন। সুখ - দুঃখ, আনন্দ - বেদনা, সমস্যা এবং সংকট সবকিছু স্বামীকে জানান। ০৬ - বিশ্বস্ত হোন এবং বিশ্বস্ত থাকুন। ০৭ - স্বামীর সব ধরণের আমানত রক্ষা করুন। ০৮ - স্বামীর সব ধরণের গোপন বিষয়াদি গোপন রাখুন। ০৯ - স্বামীর গুনাবলীর প্রশংসা করুন। ১০ - কখনো কারো কাছে স্বামীর বদনাম করবেন না। ১১ - স্বামীর সাথে বেড়াতে যান। ১২ - স্বামী যেভাবে চান সেভাবে নিজেকে সাজান। ১৩ - স্বামীর সুখে সুখী, দুঃখে দুঃখী হোন। ১৪ - সুযোগ ও সামর্থমত স্বামীর সেবা করুন। ১৫ - স্বামীর সমস্যা ও সংকটে স্বামীকে সাহাজ্য করুন। শান্তনা দিন, প্রবোধ দিন, পরামর্শ দিন, প্রয়োজন মত সঙ্গ দিন। ১৬ - স্বামীর প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করুন। তাকে বলুন আমি তোমার চিরদিনের জন্যে জীবনসঙ্গিনী। ১৭ - স্বামীর আদেশ পালন করুন। কিছুতেই স্বামীর অবাধ্য হবেন না। স্বামী যদি আল্লাহর ইচ্ছা ও সন্তুষ্টির বিপরীত কোন আদেশ করে, তবে সে ব্যাপারেই কেবল নিজের অক্ষমতা প্রকাশ করুন। ১৮ - স্বামীর কোন বদ অভ্যাস থাকলে ঝগড়া না করে, রাগারাগি না করে, ভালবাসা দিয়ে তা বিজ্ঞ চিকিৎসকের মত দূর করার চেষ্টা চালিয়ে যান। ১৯ - স্বামীর কল্যান ও উন্নতির জন্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। স্বামীর মধ্যে যা কিছ্য মন্দ গুন আছে, সেগুলা যেন দূর হয় সেজন্যে প্রচেষ্টার সাথে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। ২০ - স্বামীকে বন্ধু বানিয়ে নিন। স্বামীকে নিজের অভিভাবক মনে করুন। কারণ স্বামীই এখন আপনার বেশি আপন। ২১ - স্বামীর কাছে নিজেকে প্রকাশ করুন। স্বামীর কাছে কোন কিছু লুকিয়ে রাখবেন না। ২২ - স্বামীর সাথে পরামর্শ করে কাজ করুন। ২৩ - স্বামীর রুচিমত চলুন, কাজ করুন এবং রান্না করুন। ২৪ - মাঝেমাঝে স্বামীর পছন্দমত রান্না করে খাওয়ান। ২৫ - স্বামীর পিতা-মাতাকে নিজের পিতা-মাতার মত শ্রদ্ধা করুন, সম্মান করুন, সম্ভব অনুযায়ী তাদের সেবা করুন। ২৬ - স্বামীর কৃতিত্ব ও অবদানের জন্য গর্ববোধ করুন। ২৭ - স্বামী বাহিরে থেকে এলে হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানান। সাথে সাথে অভিযোগের ঝুড়ি খুলবেন না। ২৮ - স্বামী দূরে/ বাহিরে চাকুরী করলে, স্বামী বাড়িতে আসার পরে সংসারের কাজ সহ সবকিছু মিলিয়ে স্বামীর সাথে বেশি সময় দিন। কারণ স্বামী বাহিরে থেকে আসার পরে নিশ্চয় আপনার সঙ্গ চান। এজন্য স্বামীকে বেশি সময় দিন। ২৯ - কোন ভুল বা অন্যায় কাজ করে ফেললে তা বিনা সংকোচে স্বীকার করুন। সে জন্য অনুতপ্ত হোন, প্রয়োজনে ক্ষনা প্রার্থনা করুন। ৩০ - স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করুন। সামর্থ অনুযায়ী মেহমানদারী করুন। ৩১ - সন্তানদের সামনে স্বামীর সাথে কখনো ঝগড়া-বিবাদ করবেন না। অন্য কারো সামনে ও না। ৩২ - কারো সামনে স্বামীর অপছন্দীয় আচরণ করবেন না। ৩৩ - স্বামীর সামর্থের অধিক টাকা-পয়সা, অলংকার, পোশাক-আশাক বা অন্য কিছু স্বামীর কাছে চাইবেন না। ৩৪ - সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সন্তান প্রতিপালনে যত্নবান হোন। ৩৫ - নিজের হাত খরচ থেকে মাঝেমাঝে স্বামীকে উপহার দিন। ৩৬ - বিপদ-আপদে স্বামীর পাশে দাড়ান, স্বামীর বিপদে অটল ও অবিচল থাকুন। ৩৭ - স্বামীর অগোচরে স্বামীর অর্থ-সম্পদ, অন্য কাউকে দিবেন না। তবে স্বামীর অনুমতি - অনুমোদন ও রেজামন্দি থেকে দান করুন। ৩৮ - স্বামীর অনুমতি ছাড়া চাকুরী করবেন না। ৩৯ - কখনো কোন বিষয়ে স্বামীকে ছোট ও অপমানিত করবেন না। ৪০ - সর্ব অবস্থায় স্বামীর সংসারের হাল ধরে রাখুন। ৪১ - স্বামীর রুচিশীল ও রুচিবান হোন। ৪২ - শারীরিক ও মানসিকভাবে পবিত্র থাকুন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন ও ঘর দোয়ার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। ৪৩ - স্বামীর মেজারের প্রতি লক্ষ্য রেখে তার সাথে আচরণ করুন। অনুযোগ থাকলে সময় বুঝে করুন। অভিমান করলে অভিমানের ভিতরে ভালবাসা প্রকাশ করুন। ৪৪ - ভাল কাজ করা ও ভাল পথে চলা, সুন্দর জীবন-যাপন করা এবং আল্লাহ্ পাকের হুকুম পালন করার ব্যাপারে উৎসাহ দিন। ৪৫ - নিজেকে উন্নত করুন। স্বামীর সাথে খাপ খাইয়ে চলুন। ৪৬ - স্বামীর চাকুরী, দায়িত্ব ও ব্যবস্থা সম্পর্কে খবর রাখুন। সামর্থ মত স্বামীকে সাহায্য করুন। ৪৭ - স্বামীর কাছে নিজেকে কল্যাণময়, উপকারী ও অতুলনীয় করে তুলুন। ৪৮ - স্বামী সমস্যা মনে করে এমন কাজ কখনো করবেন না। কারণ সবাই সমস্যার সমাধান খোজে সমস্যাকে কেউ আপন করে নেয়না। একবার এক মহীয়সীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, তিনি কে? যার ভুল ধরলে বিতর্ক বাধে। বাকা হলে সোজা করতে ভেঙ্গে যায়, ব্যবহার করতে হয় কাচের মত, রত্নের মত যত্ন করে রাখতে হয়। মহীয়সী জবাব দিলেন - স্ত্রী। আপনি কিন্তু সেরকম হবেন না ইনশাআল্লাহ্। আল্লাহপাক স্বামী স্ত্রীর প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার তাওফিক দিন। আমীন ছুম্মা আমীন।

No comments

Powered by Blogger.