ads

জাহাজের কবরস্থান.. বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল।

                   জাহাজের কবরস্থান.. বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল।




১৮১৩ সালে আমেরিকার তৃতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এরন বার (Aaron Burr)এর কন্যা থিউডােসিয়া (Theodosia)(দক্ষিন কেরােলিনা রাজ্যের গভর্ণর জোসেফ এস্টোনের স্ত্রী, খুবই বুদ্ধিমতি এবং সুন্দরী কন্যা হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল) বারমুডার ওই এলাকায় গায়েব হয়েছে। থিউডােসিয়া তার পিতার সাক্ষাতের জন্য তখনকার সর্বাধুনিক জাহাজ পেট্রিয়াটে করে নিউয়াের্কের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পেট্রিয়াটের ক্যাপ্টেন তখনকার সুদক্ষ নাবিক হিসেবে আমেরিকায় প্রসিদ্ধ ছিল। সাথে তার ব্যক্তিগত ডাক্তার এবং আরাে কিছু ঘনিষ্ঠজনও ছিল। কিন্তু তারা কখনােই নিউয়াের্কে পৌছতে পারেনি। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরন বার তার কন্যাকে খুজে পাওয়ার জন্য তখন সাধ্যমত অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু না পাওয়া গেছে কন্যার খবর, না জাহাজের কোন হদিস। ১৮১৪ সালে আমেরিকার প্রসিদ্ধ

 সামুদ্রিক জাহাজ WASP কেও বারমুডা গিলে ফেলেছে। জাহাজের ক্যাপ্টেন কোন সাধারণ মানের ক্যাপ্টেন ছিলনা; মার্কিন জনসাধারণের কাছে নায়ক হিসেবে পরিচিত জনষ্টন ব্লেকলে। সে ব্রিটিশ শক্তিশালী সামুদ্রিক জাহাজ Reindeer কে স্বীয় দক্ষতা দিয়ে মাত্র ২৭ মিনিটেই পরাজিত করেছিল। এরপর আর কেউ জানতে পারেনি যে- ব্লেকলে তার ষ্টাফ এবং জাহাজ নিয়ে কোন জগতে গিয়ে পৌঁছেছে। না মার্কিন সরকার, না মার্কিন সামুদ্রিক গবেষক টিম। অথচ তখনকার মার্কিন সামুদ্রিক গবেষক টিম পানির গভীর পর্যন্ত এত ভাল করে চিনত, যেমনকি পাড়ার অলি-গলিকে মানুষ চেনে। কিন্তু অত্যাধিক খােজাখােজির পরও কোনই নাম-নিশানা কি তারা পায়নি ?!! তাহলে কি বারমুডার ট্রাইএঙ্গেল তাদের গিলে ফেলেছে ? নাকি ব্লেকেলের অত্যাধিক যােগ্যতা দেখে "গােপন শক্তি" তাকে নিজের জন্য বেছে নিয়েছে।


               
 প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) সময় মার্চ ১৯১৮ তে মার্কিন সামুদ্রিক জাহাজ সাইক্লোপিস (Cyclops U.S.A) ওই এলাকায় গায়েব হয়েছে। যাতে যুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহারের জন্য সাড়ে চৌদ্দহাজার টন মাল মজুদ ছিল। তাছাড়া তিনশত কর্মীও তাতে কর্মরত ছিল। এরও কোন নামনিশানা পাওয়া যায়নি।




জাশােয়াস্লোকোম (Jashua Slocum) এমন এক ক্যাপ্টেন। শুধু মার্কিন ইতিহাসেই নয়; সামুদ্রিক বিষয়ে সে সারাবিশ্বজুড়ে সুনাম অর্জন করেছিল। বাল্যকাল থেকেই পানির ঢেওয়ের সাথে খেলে বেড়ে ওঠা এক যুবক। সেই সর্বপ্রথম সমুদ্র পথে সারা বিশ্ব ভ্রমণ করেছিল। সর্বদা সামুদ্রিক ঝড় আর তুফান মােকবেলা করাই যার অভ্যাস ছিল। ১৯০৯। সালে Spray নামক নিজস্ব জাহাজে করে রওয়ানা হয়েছিল। অতপর বারমুডার ঐ ভয়ানক এলাকায় সে তার জাহাজ সহ চিরদিনের জন্য গায়েব হয়ে যায়। গায়েব হয়ে। যাওয়া জাহাজের তালিকায় নাম যুগ হওয়া ছাড়া আর কোন হদিস পাওয়া যায়নি।

                                         যাত্রী গায়েব...... জাহাজ উপকূলে..


 এটাও কি বিশ্বাসযােগ্য? যদি আপনাকে বলা হয়- একটি জাহাজ বারমুডার সমুদ্র সীমানায় দাড়ানাে, কিন্তু যাত্রী এবং ক্যাপ্টেন গায়েব!! খানার টেবিলে এমনভাবে খানা গুছিয়ে। রাখা; দেখলে মনে হবে- হাত ধােয়ার জন্য মনে হয় তারা উঠে গেছে। না আছে দুর্ঘটনার চিহ্ন, আর না কোন লুটপাটের নিদর্শন। নিরব সমুদ্রের মাঝে হঠাৎ খানা পিনা রেখে তারা কার মেহমান হয়ে গেছে ?!! ঘটনাটি ঘটেছে "কেরল ডারিং (Caroll Deering)নামক জাহাজের সাথে। তীরে জাহাজেরত সম্মুখভাগ বালুতে গাড়া ছিল আর পেছনের অংশ পানিতে ছিল। খানার টেবিলে খান রাখ ছিল। চেয়ারগুলি কিছু পেছনের দিকে ঝুকা অবস্থায় ছিল। মনে হবে, যাত্রীরা কোন অলৌকিক কিছু দেখে আপন আপন চেয়ার ছেড়ে উঠে এসেছিল এবং পরে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা আর পারেনি। চেয়ারটেবিলে খান আর ফলফ্রট দেখে কোন হাঙ্গামা বা দুর্ঘটনার চিহ্ন বা নিদর্শন উপলব্ধি হয়না। জাহাজের অবস্থা দেখেও এ কথা মনে হয়না যে, এখানে লুটপাট বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আশ্চর্যের বিষয়- এতবড় জাহাজকে তীরে কে আনল ?? আর যাত্রীরাই কিরূপ দুর্ঘটনার স্বীকার হল ?? কেননা এত বড় জাহাজ এত অল্প পানিতে আসা অসম্ভব।। জাহাজটি ছিল "জি জি ডেয়রিং কোম্পানী অফ পাের্টলেন্ড" এর মালিকানায়। হেরি কোনােভার (Herrey Conover) প্রসিদ্ধ মার্কিন কোটিপতি, সুদক্ষ জঙ্গি পাইলট, সামুদ্রিক জাহাজ প্রতিযােগীতায় বিজয়ী ক্যাপ্টেন ১৯৫৮ সালে তার সাথীদের নিয়ে বারমুডার অতল গহবরে গায়েব হয়েছে। কিন্তু এইবার শুধু যাত্রীরাই নিখােজ হয়েছে। কেননা পরবর্তীতে তাদের জাহাজ ফ্লোরিডার সী-বিচ থেকে ৮০ মাইল উত্তরে এক কিনারায় যাত্রীবিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। 

No comments

Powered by Blogger.