ads

প্রিয় নবী সাঃ এর ওসিয়ত। পর্ব ৩।

প্রিয় নবী সাঃ এর ওসিয়ত। পর্ব ৩।



৪১. আলী! আল্লাহর অনুগ্রহে তুমি হালাল রিযক অনুসন্ধান করবে, কারণ হালাল রিকের অনুসন্ধান করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরয।

৪২. আলী! তুমি মৃতদের সাথে বসাে না, কারণ, তারা মৃতদেরই স্মরণ করে। আলী (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! মৃত কারা ? তিনি বলেন, ধনবানরা। আর দুনিয়াদার যারা দুনিয়া সঞ্চয়ের প্রতি এমন ঝুঁকে পড়ে যেমন ঝুঁকে পড়ে কোন মাতা তার সন্তানের দিকে। এরাই ক্ষতিগ্রস্ত।

৪৩. আলী! প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করবে সে কাফের হলেও, মেহমানের সাথে সৌজন্যাচরণ করবে যদিও সে কাফের হয়। পিতামাতার অনুগত থাকবে তারা কাফের হলেও, ভিক্ষুককে বঞ্চিত করবে না যদিও সে কাফের হয়।

৪৪. আলী! সব চাইতে বড় চোর সে যার থেকে শয়তান চুরির অংশ নেয়। আলী (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা কি রূপে? তিনি বললেন, কেউ যদি মাপে কম দেয়, তা এক মুষ্টি বা এক অঞ্জলি হলেও , তার সহচর শয়তান তার কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নেয়। এভাবেই শয়তানরা ওদের রিযুক সংগ্রহ করে। আর যে কেউ সফর করে হারামের সন্ধানে, শয়তান তার সফরসঙ্গী ও সহযােগী হয়। সে সওয়ার হলে শয়তানও তার সাথে সওয়ার হয়। আর কেউ হারাম রিযুক সঞ্চয় করলে শয়তান তা থেকে অংশ নেয়। আর কেউ স্ত্রীর সাথে সঙ্গমের সময় বিসমিল্লাহ না পড়লে, শয়তান তার সন্তানে শরীক হয়ে যায়। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ
وأجلب عليهم بخيلك
তােমার অশ্বারােহী ও পদাতিক বাহিনী দিয়ে ওদের আক্রমণ কর এবং ওদের ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যাও। (১৭ঃ ৬৪)।

৪৫. আলী! যে হালাল রিক আহার করলাে সে তার দীন স্বচ্ছ রাখলাে, তার হৃদয় থাকে কোমল, আল্লাহর ভয়ে চক্ষু থাকে অশ্রুসজল এবং সে ব্যক্তির দু'আ কবুল হওয়াতে কোন বাধা থাকে না।

৪৬. আলী! যে, সন্দেহ যুক্ত খাদ্য আহার করলাে, তার দীনদারী সন্দেহযুক্ত হয়ে গেল এবং তার অন্তর হয়ে গেল অন্ধকারাচ্ছন্ন।

৪৭. আলী! যে হারাম খায় তার হৃদয় মরে যায়, তার দীনে ক্রটি পয়দা হয়; তার অন্তর হয় অন্ধকারাচ্ছন্ন , তার বিশ্বাস দুর্বল হয়ে যায়, তার দু'আ কবুলে বাধা সৃষ্টি হয় এবং কমে যায় তার ইবাদত।

৪৮. আলী! আল্লাহ তা'আলা তাঁর যে বান্দার উপর অসন্তুষ্ট হন, তাকে হারাম রিক দো হয়, যদি আল্লাহর অসন্তুষ্টি আরাে বেড়ে যায় তখন তার সাথে শয়তানকেও শরীক করে দেওয়া হয়, সে তাকে দুনিয়ার কাজে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে, সরিয়ে রাখে তাকে দীনের কাজ থেকে। শয়তান তাকে পাপ কাজে মশগুল রাখার জন্য বলে, আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং দয়ালু।

৪৯. আলী! আল্লাহ তাঁর কোন বান্দাকে ভালবাসলে তখন তার দু’আ কবুল করতে বিলম্ব করেন। ফিরিশতাগণ তার জন্য সুপারিশ করে বলেন, ইয়া আল্লাহ! আপনার এ বান্দার দু'আ কবুল করে নিন। মহান আলাহ বলেন, আমার বান্দাকে আমার দয়ার উপর ছেড়ে দাও। তােমরা আমার চাইতে আমার বান্দার প্রতি অধিক দয়ালু নও। আমার বান্দার দু'আ ও কান্নাকাটি আমার ভাললাগে, আমি সম্যক জ্ঞাত ও অবহিত।

৫০. আলী! যে লােকদের সত্য পথের দিকে আহবান করে এবং ললাকেরা তার অনুসরণ করে, তখন সেও অনুসরণকারীদের আমলের সওয়াব পাবে অথচ অনুসরণকারীদের আমলের সওয়াবে কোন কমতি করা হবে না।

৫১. আলী! কেউ মানুষকে আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজের দিকে আহবান করলে এবং তার কথায় সাড়া দিয়ে কেউ হারাম কাজ করলে সে পাপের অংশ আহবায়কও বহন করবে অথচ তার আহবানে যারা পাপ করেছে ওদের শান্তি লাঘব করা হবে না।

৫২. আলী! পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত আল্লাহ কোন সালাত কবুল করেন না, আর কোন হারাম মাল থেকে সাদাকা করা হলে আল্লাহ্ তা কখনাে কবুল করেন না।

৫৩, আলী! হারাম থেকে উদর পবিত্র না রাখলে এবং উপার্জন হালাল না হলে কারাে তওবা কবুল করা হয় না।

৫৪. আলী! মৃত ব্যক্তিদের জন্য দান করবে, কারণ, আল্লাহ্ তা'আলা জীবিতদের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তিদের কাছে দান-খয়রাতের সওয়াব পৌছিয়ে দেওয়ার জন্য কিছু সংখ্যক ফিরিশতা নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। তারা যখন দান-খয়রাতের সওয়াব বহন করে মৃত আত্মীয় ও বন্ধুদের কাছে নিয়ে যান, তখন তারা অত্যন্ত আনন্দিত হন। এর পর তারা দুয়ািতে যে ধন-সম্পদ রেখে এসেছেন সে সবের কথা স্মরণ করে অনুতপ্ত ও দুঃখিত হন। তারা বলেন, ইয়া আল্লাহ! যারা আমাদের জন্য দান করেছেন তাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জান্নাতের সুসংবাদ দিন। যেমন জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন আপনি আমাদেরকে। আমরা অনুতপ্ত যে সম্পদ রেখে এসেছি সে সবের জন্য।

৫৫. আলী! তুমি আল্লাহর কাছ থেকে যা পাও, তাতে তুষ্ট থাক। কেননা, অভাবের চাইতে তিক্ত আর কিছু নেই।

৫৬. আলী! লজ্জাই দীন। লজ্জা হলাে—মাথা ও তৎসংশ্লিষ্ট সব কিছুর হিফাযত করা, উদর এবং উদরে যা সঞ্চিত হয় সে সবের ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা। ইবাদতের মূল হলাে, আল্লাহর যিকরে রত থাকা, অন্য বিষয়ে নিরবতা অবলম্বন।

৫৭, আলী! ছয়টি জিনিস শয়তানের প্রভাব প্রসূত ও ক, হাই তােলা, খ, বমি করা, গ. পেট থেকে মুখের দিকে খাদ্যদ্রব্য বা পানীয়ের উদগীরণ, ঘ, নাক দিয়ে রক্ত ঝরা, উ, প্রথম বারের হাঁচি ব্যতীত অপর সকল হাঁচি, চ, তন্দ্রা।

৫৮. আলী! তুমি রাতে সালাত আদায় করবে বকরী দোহন করতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় পরিমাণ হলেও। কারণ, রাতে দু'রাকাআত সালাত আদায় করা উত্তম, দিনে মসজিদে গিয়ে হাজার রাকাআত সালাত আদায় করার চাইতে। যারা দিনে সালাত আদায় করে তাদের চাইতে রাতে যারা সালাত আদায় করে তাদের চেহারা হয় অতি রৌশন। | ৫৯. আলী! যারা তাওবা করে তাদের জন্য বেশি বেশি এসূতেগফার পড়া মজবুত দুর্গম্বরূপ।

৬০. আলী! অপরাধী কোন দু'আ করলে আর আল্লাহ্ জানেন যে, এ দু'আ কবুল করা হলে এতে রয়েছে এদের অনিবার্য ধবংস, তখন আহ্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফেরেশতাগণকে বলেন, এ ব্যক্তি যা চায় তাকে তা দিয়ে দাও, এতেই নিহিত রয়েছে

No comments

Powered by Blogger.