ads

আদর্শ স্ত্রীর বিশেষ গুণ ।স্বামীর মনের তালা খুলতে পারা।

আদর্শ স্ত্রীর বিশেষ গুণ ।স্বামীর মনের তালা খুলতে পারা।


বদ্ধতালা খােলা যায় চাবী দ্বারা। কিন্তু মনের তালা কি খােলা যায় চাবী দ্বারা? না খােলা যায় না। মনের তালা খুলতে পারে মনের মানুষ। স্বামীর মনের মানুষ একমাত্র তার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী-ই হওয়া বাঞ্ছনীয়। সে-ই তার প্রাণপ্রিয় স্বামীর মনের তালা খুলতে পারে। তবে প্রশ্ন হল, স্বামীর মনের বদ্ধ তালা স্ত্রী কিরূপে খুলতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তর ও দিক নির্দেশনা নিম্নে প্রদত্ত্ব হল। আশাকরি আদর্শ স্ত্রী এবং প্রতিটি বিবাহিতা, অবিবাহিতা নারীর উপকার হবে। এ কথা বাস্তব সত্য যে, স্বামী যতই স্ত্রীবিমুখ হােক না কেন; যতই পাষাণহৃদয়ী হােক না কেন, কিন্তু আল্লাহ তাআলা প্রাকৃতিকভাবে নারী জাতিকে এমন কামনীয় ঢং, আকর্ষণীয় রং, সুমিষ্ট ভাষা, হৃদয়গ্রাহী হাসা, রূপেমাখা কপাল, হাসিমাখা কপােল, শরমমাখা স্বভাব, নরমমাখা প্রভাব, পাগল করা ঠোট, পটল চেরা চোখ, মুক্তাঝড়ানাে দাঁত, নরম পেলব হাত, রংবেরঙ্গের বেশ, নয়ন জুড়ানাে কেশ দান করেছেন। নেক, সৎ, খােদাভীরু ও বুদ্ধিমতি আদর্শ স্ত্রীরা আল্লাহ প্রদত্ত্ব ঐ নেয়ামতসমূহকে যথােপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাণপ্রিয় স্বামীকে একান্ত আপন বানিয়ে নেয়।

                   যদি কোন স্ত্রী বলে যে, আমাকে এমন একটি তাবীয দিন, যেন আমার স্বামী আমাকে মুহাব্বতের দৃষ্টিতে দেখতে থাকে, আমাকে ভালবাসে, আদরসােহাগ করে। তখন আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলতে হয় যে, তার (স্ত্রীর) প্রতিটি ভাষা, প্রতিটি হাসা, প্রতিটি চাহনী, প্রতিটি আবরনী, প্রতিটি রং, ঢং, কপাল, কপােল, স্বভাব, প্রভাব সবকিছুই যখন তাবীয এবং প্রত্যেকটিতে রয়েছে যাদুর চেয়ে অধিক প্রভাব ও ক্ষমতা, তখন সে কেন এবং কিসের তাবীয চাচ্ছে? | হ্যাঁ, স্বামী যদি বলে যে, আমাকে একটি এমন তাবীয দিন, যারা আমার স্ত্রী আমাকে মান্য করে, ভালবাসে, তাহলে এটা বিবেকে ধরার মত কথা হতে পারে এবং এ ব্যাপারে চিন্তা করা যেতে পারে, তাকে কোন দিকনির্দেশনা দেয়া যেতে পারে। কিন্তু নারীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার কামনীয় আচরণ, বিশেষ করে ত্যাগ-তিতিক্ষা, ধৈৰ্য্য-সহ্য, সহানুভূতি, সহমর্মিতা এবং আত্মবিসর্জনের মত মহৎ গুণে এমন যুগান্তকারী প্রভাব রয়েছে, যার সমতুল্য অন্য কোন বস্তু নেই। | মনােবিজ্ঞানীরা বলেন, যদি ১৩০ তলাবিশিষ্ট বিল্ডিং এর উপর কোন নারী দাড়িয়ে থাকে, আর কোন পুরুষ পথিক আনমনে পথ চলতে থাকে, তাহলে সহজাত স্বভাবের বশবর্তী হয়ে পুরুষ ঐ নারীকে দেখার জন্য একবার হলেও মাথা তুলে উর্ধমুখী তাকাতে বাধ্য হবে। আকর্ষণের দিক দিয়ে ল’ল', মারজান ও ঝামরাদের কোন পাথর, মাকনাতীসের কোন অমূল্য খন্ড এতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে না, যতটুকু একজন নারী একজন পুরুষের উপর স্বীয় প্রভাব খাটাতে পারে। মনােবিজ্ঞানীরা অভিজ্ঞতার আলােকে এ কথাও বলেছেন যে, “যদি কোন ধুধু প্রান্তরে নারীর একটি কঙ্কাল এবং পুরুষের একটি কঙ্কাল পাশাপাশি রেখে দেয়া হয়, তবুও তাদের মাঝে আকর্ষণ সৃষ্টি হয়ে যাবে।

        ” পুষ্পকাননে সাড়ি বাঁধা পুষ্পবৃক্ষের সৌন্দর্য একদিকে, শীতল সমিরণে দোল খাওয়া একগুচ্ছ লাল গােলাপের অপরূপ রূপ একদিকে, শানবাঁধা পুকুর ঘাটে ভাসমান নীল পদ্মের মনােরম দৃশ্য একদিকে, হাসনেহেনার মন মাতানাে মিষ্টি সুবাস একদিকে, শিশির ভেজা দুব্বা ঘাসে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত পড়ে থাকা শিউলি ফুলের আত্মসমর্পন একদিকে, আউসের ক্ষেতে বয়ে যাওয়া ঝিরি ঝিরি বাতাসের ছন্দময় গতির সৌন্দর্য একদিকে, আষাঢ়ের বৃষ্টিস্নাত গােধূলী বেলায় নীল আকাশে মেঘমালার লুকোচুরি খেলার দৃশ্য একদিকে, দোয়েল-কোয়েল ও কোকিলের কিচির মিচির, কুহু কুহু শব্দ ব্যঞ্জন একদিকে, অভিমানী, লজ্জাবতী বৃক্ষের পাতার আনুগত্য একদিকে আর নেক, সৎ ও ফরমাবরদার স্ত্রীর আনুগত্যমাখা ও মুচকী হাসি একদিকে। যেমন ঃ স্ত্রী স্বামীকে বলবে জানে মান! বলুন, কি হুকুম? আমি সেবার জন্য সদা প্রস্তুত। কি লাগবে? কি দরকার, কি খাবেন? ..... ইত্যাদি। এ হল একজন নেক, ফরমাবরদার, অনুগত ও বাধ্যগত আদর্শ স্ত্রীর চিত্র, উপমা। তাই, জ্ঞানী-গুণী, বুদ্ধিমতী স্ত্রীকে স্বামীর ভালবাসা, আদরসােহাগ পাওয়ার নিমিত্ত অথবা পিয়ার-মুহাব্বত বৃদ্ধি করার নিমিত্ত ঝাড়ফুক বা তাবীয-তুমারের মােটেও প্রয়ােজন নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ কোন স্ত্রীর নসীবে যদি বদমেজাজ, স্ত্রীবিমুখ স্বামী জোটে, যাকে শুক্ষ্ম বুদ্ধি, হেকমত ও গভীর প্রজ্ঞা দ্বারা কুপােকাত করে নির্ঘাত বাজীমাত করার প্রয়ােজন। দেখা দেয় অথবা বিবেক-বিবেচনা ও ছলচাতুড়ীর পায়েল দ্বারা স্বামীকে ঘায়েল ও মায়েল করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে, তাহলে এমন স্বামীর আবদ্ধ তালাকে খােলার পাঁচ পাঁচটি যাদুমাখা চাবি উপস্থাপন করা সমীচীন করছিঃ


 (১) প্রথম চাবি দৃষ্টি ও সর্বপ্রথম পুরুষের অন্তর ও মেজাজে যে বস্তুটি আঘাত করে, তাহল পুরুষের দৃষ্টি। প্রথমে তার দৃষ্টি সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই মেয়েটি তার জীবন চলার পথে সঙ্গীনীরূপে ফিট হবে কিনা? সংসার নামের দুর্গম পথ পাড়ি দিতে পারবে কি-না? অতঃপর তার অন্তর সত্যায়ন করে, হ্যাঁ অথবা না .....? তাই প্রতিটি বুদ্ধিমতী স্ত্রীর করণীয় এই যে, নিজেকে সদা-সর্বদা পরিস্কারপরিচ্ছন্ন রাখা সহ শােবার ঘর এবং সন্তানদেরকে যত্ন সহকারে পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখবে। যাতে করে স্বামীর দৃষ্টি স্ত্রীর ময়লামাখা গাল বা পােশাকের উপর পতিত না হয়। অতঃপর স্বামীর অন্তর ব্যথিত না হয়। বরং সেজেগুজে এমনভাবে আকর্ষণীয় হয়ে থাকবে, যাতে করে স্বামীর দৃষ্টি তা দেখে পরিতৃপ্ত হয়।

 (২) দ্বিতীয় চাবি কর্ণ ও কর্ণ দ্বারা স্বামীর কথা শ্রবণ করা, অতঃপর তা মান্য করা। এমনিভাবে স্বামীর কর্ণকুহুরে এমন মিষ্টি সুরে কথা পৌছে দেয়া, যাতে সে পাগল দেওয়ানা হতে বাধ্য হয়। কতক গৃহিনীর আক্ষেপ ভরা কথা শ্রবণ করে আশ্চর্যান্বিত হই, যখন তারা স্বীয় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযােগ উত্থাপন করে যে, স্বামী তাকে খুব প্রহার করে, কথায় কথায় ধমকায়, শাসন করে, তার কথা মােটেও শুনতে চায় না, কোথাও বেড়াতে নিয়ে যায়না ..... ইত্যাদি। অথচ মহামহিমাময় আল্লাহ তা'আলা তাকে এমন মধুমাখা সুরেলী কণ্ঠ দান করেছেন যে, যদি ঐ কণ্ঠের সঠিক ব্যবহার, সঠিক প্রয়ােগ করতে পারে, তাহলে ফাগুন আনা বসন্ত কালের কোকিলের কুহু কুহু কণ্ঠ, অন্তরে আগুনআনা মাছরাঙ্গা পাখির রূপের ঝলক, পাখপাখিলীর কিচির-মিচির শব্দের তরঙ্গ, ময়না পাখির পাগল করা অঙ্গ, মৌমাছিদের গুনগুনাগুন গান গাওয়া, পৌষ মাসে ধানের ক্ষেতের হিমেল হাওয়া, প্রজাপতির পাখনাতে যে রঙ্গের বাহার, হাসনে হেনা ফুলের যে মিষ্টি সুবাস, কিশােরীর খােপায় সুশােভিত বকুল ফুল, আম বাগানের থােকা থােকা, আম্র মুকুল, প্রভাতকালে ফুল বাগানের লাল টুকটুক জবা, সাঁজের বেলা পশ্চিম দিগন্তের রক্তমাখা আভা, আর শরৎকালে শিশির ভেজা শিউলি ফুলের হাসি-এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একদিকে, কিন্তু কোমল হৃদয় ও ফরমাবরদার স্ত্রীর বিনম্র বােল ও কথা হাউজে কাউছার এবং তাছনীম নামক নিঝরনীর পানি দ্বারা বিধৌত ফুলের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। যেমন : স্বামীর কথা কানে পৌছার সাথে সাথে উপস্থিত হয়ে স্ত্রী যদি চাঁদমাখা চেহারা নিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, আমি এসেছি, কোন কিছু লাগবে কি? পাঠক/পাঠিকা ইনসাফ করে বলুন, এমন চৌকান্না স্ত্রীর প্রতি কি স্বামী অসন্তুষ্ট থাকতে পারে? তাই বুদ্ধিমতি আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য এই যে, খুব বুদ্ধিমত্তা ও প্রজ্ঞার সাথে লক্ষ্য রাখবে যে, স্বামীকে কোন সময় কি বলতে হবে? কখন নিরব-নিথর থাকতে হবে? কখন নম্রতার সাথে কথা বলতে হবে? কেমন আবদার বা মান-অভিমান তিনি পছন্দ করেন? মেজাজটা তার আজ ঠান্ডা, না গরম? .......... ইত্যাদি, ইত্যাদি। এসব স্থান-কাল পাত্রের প্রতি খু-উ-ব লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ, এসব ঐ পথ, যা স্ত্রীকে স্বামীর হৃদয় গভীর পর্যন্ত পৌছাতে চমৎকার সহায়তা করে। বিশেষ করে কর্ণ এমন একটি পথ, যার ছিদ্র দ্বারা যদি একবার কোন কথা বা শব্দ প্রবেশ করে, তাহলে তা মউত্তক কর্ণকুহুরে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। আল্লাহ তা'আলা সকল মুসলিম স্বামী-স্ত্রীকে ভাল কথা বলার এবং ভাল কথা শ্রবণ করার শক্তি দান করুন।

 (৩) তৃতীয় চাবি নাসিকা ঃ নাসিকা দ্বারা ঘ্রাণ লওয়া এবং স্বামীর নাসিকাকে সন্তুষ্ট রাখা। প্রতিটি আদর্শ স্ত্রীর করণীয়, বরণীয় কর্ম এই যে, প্রতিদিন প্রাণপ্রিয় স্বামীর জন্য এমন সুগন্ধি আতর ব্যবহার করবে, যা তার মন-মস্তি স্ক ও অন্তরকে বিমােহিত করে দেয়। সুগন্ধি এমন হবে, যার রং হবে গাঢ় কিন্তু গন্ধ হবে প্রচুর। যেমন ঃ গন্ধযুক্ত মেহেন্দী, জাআফরান ইত্যাদি। কোন সময় কেমন সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে, সে ব্যাপারে মেয়েরাই বেশী অভিজ্ঞতা রাখে। এমনিভাবে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে খুশবু লাগিয়ে দেয়ার সুন্নতটিও আদায় হয়ে যাবে । হযরত আয়িশা (রাঃ) মহানবী (সাঃ) এর এহরামের কাপড়ে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতেন, এই আতর মাখামাখি স্বামীস্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ককে আরাে আরাে সুদৃঢ়, মজবুত, শক্তিশালী বানানাের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

 (৪) চতুর্থ চাবি হস্ত ও আমাদের দেশের অধিকাংশ বিবাহিতা নারীর এ বাস্ত ব সত্যটি জানা থাকেনা যে, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর স্পর্শিত হওয়া উভয়ের অন্ত র এক হওয়ার বড় সহায়ক। কুদরতী ও প্রাকৃতিকভাবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের শরীরের স্পর্শজনিত উষ্ণতা বিশেষ করে স্ত্রীর কর্তৃক স্পর্শ দ্বারা যে উষ্ণতা নির্গত হয়, তা উভয়ের অসংখ্য রােগ-ব্যধি ও দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা ধ্বংস করার পরীক্ষিত কারণ। সুতরাং, মুসলমান আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য এই যে, হযরত আদম (আঃ) হতে আজ পর্যন্ত যে নিয়মটি প্রচলিত হয়েছে, তার বিরােধিতা না করা; বরং জাগতিক, পরকালিক ঐ উপকার অর্জন করতে স্বামীকে জান-প্রাণ দিয়ে সহায়তা করা। দাম্পত্য জীবনে সুখময়, আনন্দময় ও দীর্ঘস্থায়ী করতে প্রতিদিন স্বামীকে হস্ত দ্বারা কোমল স্পর্শ উপহার দিবে। প্রতিদিন দ্রিা যাওয়ার প্রাক্কালে মসজিদ, মাদ্রাসা, অফিস, আদালত, মিল-কারখানা তথা কর্মস্থল থেকে ফিরে আসা স্বামীর ক্লান্ত দেহে কোমল হাতের স্পর্শ দ্বারা প্রশান্তি বর্ষণ করবে। অতঃপর মস্তক শীতলকারী যে কোন ভাল তৈল দ্বারা স্বীয় হস্তে মাথা মালিশ করবে। সম্ভব হলে, হাত, পা মর্দন করবে। বুদ্ধিমতি আদর্শ স্ত্রী তারাই, যারা আপন স্পর্শ দ্বারা উভয়ের দু’টি মন দু'টি দেহকে এক মন এক দেহ বানাতে সফলকাম হয়।

 (৫) পঞ্চম চাবি মুখ ঃ কোন বস্তুর স্বাধ গ্রহণ বা সুস্বাদু খাদ্য দ্রব্য আস্বাদন করতে মুখের ভূমিকাটাই মুখ্য। মুখের ক্ষমতা, প্রভাব ও কার্যকারিতা অপরিসীম। মুখ মানব দেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। স্বামী-স্ত্রীর প্রেম-ভালবাসা ও সুগভীর সম্পর্ককে আরাে গভীরতর করতে মুখের বড় প্রভাব। স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্কের গভীরতা কোন থার্মোমিটার বা কোন আধুনিক প্রযুক্তি অথবা রাডার কিংবা কোন ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র দ্বারা পরিমাপ করা যায় না; যতটুকু পারা যায় মুখ দ্বারা। আর তা হল, স্বামীর সােহাগমাখা চুম্বন গ্রহণ করা এবং স্বামীকে শ্রদ্ধাচুম্বন উপহার দেয়া। বুদ্ধিহীন, নির্বোধ ও অশিক্ষিত নারীরাই কেবল এ যুগান্তকারী ছাওয়াবের কাজটিকে অবজ্ঞা, অবহেলা করতে পারে। মহিলা ছাহাবীয়া (রাঃ) হতে বিভিন্ন সময়ে স্বীয় স্বামীকে শ্রদ্ধাচুম্বন করার ঘটনা প্রমাণিত রয়েছে। বিশেষ করে স্বামী যখন গৃহ থেকে কর্মক্ষেত্রে গমন করছেন, তখন স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ললাটে বিদায় সম্বােধনসরূপ চুম্বন করতে পারে। এতে স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি বৃদ্ধির সুবাদে পিয়ার-মহাব্বত ও উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাবে। স্বামী বিদেশে অথবা দেশের অভ্যন্তরে সফরে যাচ্ছেন তখনাে স্বামীর ইজ্জত-সম্মান ও শ্রদ্ধা-ভক্তির প্রতি লক্ষ্য রেখে তার ললাটে চুম্বন করা যেতে পারে। তবে শালীনতা ও গােপনীয়তা এতে আবশ্যকীয় শর্ত। আমাদের মুসলিম সমাজের অনেক নারী এ কার্যকরী ফলপ্রসূ কাজটিকে শালীনতা বিবর্জিত ও নির্লজ্জতা আখ্যা দিয়ে গা বাঁচিয়ে রাখে। এতে স্বামীর মনের বন্ধ তালা বন্ধই থেকে যায়। অতঃপর সামান্য ভুলের কারণে তাদের সংসার ও দাম্পত্য জীবন রূপান্তরিত হয় রসকষহীন শােলার মত অথবা আদা-লবনহীন ডালের মত। অনেক গৃহিণীকে দেখা যায়, স্বামীর মুহাব্বত বৃদ্ধি করার নিমিত্ত পানি পড়া নিতে অথবা আমল শিক্ষা করতে কিংবা তাবীয়-তুমারী, ঝাড়-ফুক, যাদু টোনার আশ্রয় নিতে। যাতে করে স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ না করে; বরং স্বামীর পূর্ণ মনােযােগ, মনের সকল ঝােক সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা তথা অহর্নিশি তার-ই প্রতি ধাবিত থাকে, অন্য কারাে প্রতি নয়। আমি মনে করি, এ অকার্যকরী পদক্ষেপ না নিয়ে উল্লেখিত তাবীয ব্যবহার করুন। দেখবেন, তালা খােলে কিভাবে। অধিকাংশ মেয়ে, যারা পিত্রালয়ে পড়ে থাকে অথবা স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্তা হয় কিংবা তার স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করতে বাধ্য হয়, তার কারণসমূহ যাচাই করলে এ কথাই প্রতিয়মান হয় যে, স্ত্রীদের পক্ষ থেকে উল্লেখিত পাঁচটি চাবি ব্যবহারের অলসতা। অবহেলা ও অলসতার কারণেই সে তার স্বামীর মনের তালা খুলে তার অন্তর জয় করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর যে নারী স্বীয় স্বামীর অন্তর জয় করতে ব্যর্থ হল, তার জানা-ই নেই, ভালবাসা কারে কয়। | তাই প্রতিটি আদর্শ স্ত্রী, গৃহবধূর কর্তব্য এই যে, উল্লেখিত উপদেশ। অনুযায়ী জীবন-যাপন করে স্বামীর অন্তর জয় করা। যাতে করে এ সুন্দর বসুন্ধরার ক্ষণস্থায়ী জিন্দেগীও যেন স্বর্গসুখে ভরে যায় ।

No comments

Powered by Blogger.