ads

ডুবে যাওয়া জাহাজ ফেরত। বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল এবং দাজ্জাল।

ডুবে যাওয়া জাহাজ ফেরত। বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল এবং দাজ্জাল।



ডুবে যাওয়া জাহাজ ফেরত এ ধরনের কোন সংবাদও কি আপনি এ পর্যন্ত শুনেছেন যে, কোন জাহাজ সম্পূর্ণরূপে সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়েছে এবং কিছুদিন পর তা পূর্বাবস্থায় কোন কিছু নষ্ট হওয়া ছাড়াই উপরে এসে গেছে। একটি জাহাজ বারমুডার ট্রাইএঙ্গেলের সীমানায় চলছিল। সমুদ্রের ঢেও একে নিয়ে খেলছিল। কিন্তু তাতে কেউ ছিলনা; ভেতরে সম্পূর্ণ খালী ছিল। না ক্যাপ্টেন, না যাত্রী আর না কোন কর্মচারী। জাহাজের নাম "লাদাহামা"। এস.এযটেক নামক জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং কর্মচারীরা যে দৃশ্য অবলােকন করেছিল, তা নিম্নরূপ : | "সবকিছু ঠিকঠাক, সঠিক জায়গায় বিদ্যমান। না কেউ কিছু উঠিয়েছে, না ছিন্নভিন্ন করেছে। না আছে লুটমারের চিহ্ন, না কোন দুর্ঘটনার আলামত। এমনকি ক্যাপ্টেনের ব্যবহৃত কলম আর দূরবীন পর্যন্ত সঠিক জায়াগায় ছিল।" এথেকেও অবিশ্বাস্য খবর হচ্ছে- সামুদ্রিক জাহাজ "রানী"র রেকর্ডে এটি ডুবে যাওয়া জাহাজের তালিকায় ছিল যাকে ইটালীর রেক্স (Rex) নামক জাহাজের যাত্রী এবং কর্মচারীরা ডুবে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষ করেছিল। চিন্তার বিষয়...... কে এই গায়েবকারী ?? গায়েব করার পর জাহাজ থেকে কোন মূল্যবাণ জিনিস আটক করেনা, কারাে কাছে কোন দাবীও পেশ করেনা। বরং চিরদিনের জন্য নিজের কাছে নিয়ে যায়। এরপর যায়ই বা কোথায় ?? এমন সব ঘটনা; যার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। বারমুডার সমুদ্রের অভ্যন্তরের সকল ঘটনাই কি আকস্মিক ??! নাকি সুসংগঠিত কোন শক্তি নির্দিষ্ট কোন টার্গেট লক্ষ্য করে এসব ঘটনার জন্ম দিচ্ছে ??!!!! | বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে নিরব। বরং তাদের চুপ করিয়ে দেয়া হয়েছে। গবেষণার সকল দরজা বন্ধ। সম্পূর্ণ নিশ্রুপ। বরং মৃত্যুর হুমকি। তাহলে এসব কেন ?? গবেষকদের কাছে একটি কথা স্পষ্ট যে, সামুদ্রিক ঝড়-তুফান বা স্বাভাবিক দুর্ঘটনার সাথে এগুলাের কোন সম্পর্ক নেই। এমনও কখনাে হয়নি যে, জাহাজের সকল মূল্যবাণ সম্পদ আসবাবপত্র লুট করা হয়েছে। পাশাপাশি গায়েবকৃত জাহাজ থেকে আশপাশের হেডকোয়ার্টারগুলিতেও কোন সাহায্যের বার্তা প্রেরণ করা হয়নি। তবে কখনাে কখনাে কিছু বার্তা পৌঁছেছিল, যা সম্পূর্ণ অস্পষ্ট ছিল। এ সকল অস্পষ্ট বার্তায় গবেষণা ও তদন্ত করে গবেষকরা একটি ফলাফলে ঠিকই উন্নিত হয়েছেন যে, এ ঘটনাগুলি খুবই দ্রুততার সাথে ঘটানাে হয়েছে এবং ঘটনার সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন ও যাত্রীদের উপর হঠাৎ ভয়ানক এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। | ১৯২৪ সালে জাপানী মালবাহী জাহাজ "রিভােকোমারাে" (Rivoco Maro)গায়েব হওয়ার পূর্বে উপকুল হেডকোয়ার্টারে এই বার্তা প্রেরণ করে :- " আমাদের উপর এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে.......। ভয়........ ভয়............ দ্রুত আমাদের সাহায্য কর।" | তবে ১৯৬৭ সালে গায়েব হওয়া ভ্রমণজাহাজ "ভিচক্রাফট" থেকে সর্বশেষ যে বার্তা পৌছেছিল, তা জাহাজের মালিক নিজে (তখন সে জাহাজের মধ্যে ছিল) নিকটস্থ হেডকোয়ার্টারে নিমুক্ত বার্তা দিয়েছিল :"জাহাজ পানির নিচে কোন অজানা বস্তুর সাথে ধাক্কা খেয়েছে....। পেরেশানীকর কোন কিছু সামনে আসেনি.....। জাহাজে কোনরূপ সমস্যা হয়নি.....। তবে সবকিছু ঠিকঠাকরূপে কাজ করছেনা......।" এই বার্তা পাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে বিশেষ সাহায্য টিম জাহাজের স্থানে পৌছেছিল। কিন্তু এই তিন মিনিটের মধ্যেই জাহাজ তার মালিক ও মালিকের বন্ধু (মার্কিন সিনেট জর্জ চার্চের পাত্রী ফোর্চ লােডার ডেল) সহ যাত্রীদেরকে নিয়ে কোন অজানা স্থানে চলে গেছে। ঠিক পনের মিনিট পরেই আরাে একটি টিম ওখানে পৌছে আশপাশের দুইশ কি: মি: এলাকাজুড়ে তন্ন তন্ন করে খােজাখােজির পরও এর কোন হদিস তারা বের করতে সক্ষম হয়নি।

                                                আরাে একটি আশ্চর্য বার্তা


 আমি আমার বড় জাহাজটি নিয়ে মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমার জাহাজের পেছনে কিকোস ট্রেডার (Kikos Trader) নামক আরেকটি ছােট জাহাজ বাঁধা ছিল, যাকে আমার জাহাজ টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। আবহাওয়া সম্পূর্ণ পরিস্কার ছিল। এমন পরিস্কার আবহাওয়াই শিকারের উপযুক্ত সময়। আমরা "বাহামা"র দ্বীপসমূহের মাঝখানে এমন জায়গায় এসে পৌছেছি যেখানে পানি খুবি গভীর। যখন অন্ধকার ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল তখন দিক নির্দিষ্ট করার জন্য আমি ক্যাপ্টেনের কক্ষে আসলাম। অতপর চিন্তা করলাম- কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে নেয়া যাক। তাই আমি আমার কক্ষে ফিরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। হঠাৎ ঢেওয়ের একগুচ্ছ পানি আমার চেহারায় এসে পড়ল। আমি বিছানা থেকে উঠে বসে দেখি চারিদিক থেকে পানি কক্ষে প্রবেশ করছে। খুব কষ্ট করে দরজার কাছে এলাম। দরজা খুলব এমন সময় দরজার কপাট আমার উপর এসে পড়ল (অথচ দরজার খিল লক করা ছিল) দেখলাম যে, আমি সমুদ্রের নিচে। সাতরিয়ে সমুদ্রের উপরিভাগে আসার চেষ্টা করলাম। আমার অনুভব হচ্ছিল- কে যেন নিচের দিক থেকে টেনে আমাকে সমুদ্রের গভীরে নিয়ে যাচ্ছে। আমি দ্রুত উপরিভাগে আসার চেষ্টা করছিলাম। পরিশেষে চেষ্টা সফল হল। উপরে এসে দেখি আমার জাহাজ গায়েব, আর কিকোস ট্রেডার (যাকে আমার জাহাজ টেনে আনছিল) পানির উপর বিদ্যমান। সে মাইক দিয়ে আমাকে ডাকছে।" উল্লেখিত বক্তব্য Wildjaw নামক জাহাজের ক্যাপ্টেন জুয়ে টিলির। কিন্তু জুয়ে টিলিও বলতে পারেনি যে, তার জাহাজ ওখানে কিরূপ দুর্ঘটনার সম্মুখিন হয়েছিল। অথচ সাগর ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও পরিস্কার। আর বেচেঁ যাওয়া জাহাজ কিকোস ট্রেডারের ক্যাপ্টেন শুধু এটুকু বলতে পেরেছে যে- "হঠাৎ জাহাজের নিয়ন্ত্রণ আমার হাত থেকে ফসকে গেছে।

                    বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলে গায়েব হওয়া প্রসিদ্ধ কয়েকটি জাহাজ।


 (১) ১৮০০ সালের আগষ্ট মাসে মার্কিন জাহাজ এন্স্যারজেন্ট কোনরূপ দুর্ঘটনা ছাড়াই গায়েব হয়েছে। তাতে ৩৪০ জন যাত্রী আরােহী ছিল।
(২) ১৮৮০ সালের জানুয়ারী মাসে আটলান্টা নামক ব্রিটিশ জাহাজ গায়েব হয়। তাতে ২৯০ জন যাত্রী আরােহন করেছিল।
(৩) ১৯০২ সালের অক্টোবর মাসে ফেরিয়া (Feria)নামক জার্মান জাহাজ গায়েব হয়। পরবর্তীতে জাহাজ উদ্ধার হলেও যাত্রী এবং কর্মচারীদের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
(৪) ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে মার্কিন মালবাহী জাহাজ সাইক্লোপ (Cyclop) সমস্ত কর্মচারী সহ গায়েব হয়। তাদের সংখ্যা- ৩০৯ জন।
(৫) ১৯২৪ সালে জাপানী মালবাহী জাহাজ রাইনােকো (Raynoko) গায়েব হয়।
(৬) ১৯৩১ সালে মালবাহী জাহাজ ষ্টাফজার (Stafger)গায়েব হয়। একই বছরের এপ্রিল মাসে "জন এন্ড মেরি" (Jhon & Mary)নামক মার্কিন জাহাজ গায়েব হয়। এর কিছুদিন পর বারমুডা থেকে পঞ্চাশ কিলােমিটার দূরে পানির উপর ভাসমান অবস্থায় তা উদ্ধার হয়।
(৭) ১৯৩৮ সালের মার্চ মাসে ব্রিটিশ-অষ্ট্রেলিয়ান মালবাহী "ইংলাে-অষ্ট্রেলিয়াজ" নামক জাহাজ গায়েব হয়। (৮) ১৯৪০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে "গ্লোরিয়া কোল্ড" (Gloria Cold)নামক ভ্রমণজাহাজ গায়েব হয়। এর কিছুদিন পর ওই স্থান থেকে আরাে দুইশ মাইল দূরে তা যাত্রীবিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়।
(৯) ১৯৪৪ সালের ২২ অক্টোবর কিউবার "রেড পিকোন" (Red Peakon) নামক জাহাজ গায়েব হয়। কিছুদিন পর "ফ্লোরিডা"র উপকূল এলাকার নিকটবর্তী এক জায়গায় তা যাত্রীবিহীন পানির উপর ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
(১০) ১৯৪৮ সালে ফ্রান্সিস "রােযালী" (Rozali) নামক জাহাজ থেকে কর্মচারী গায়েব করা হয়। অতপর ওই এলাকা থেকেই জাহাজ কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া উদ্ধার হয়।
(১১) ১৯৫০ সালের জুন মাসে "সেন্ট্রা" (Sandra)নামক জাহাজ ওই এলাকায় গায়েব হয়।
(১২) ১৯৫৫ সালে Queen Mayrio নামক ভ্রমণজাহাজ গায়েব হয়।
(১৩) ১৯৬৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারী "মেরিন সেলফার কুইন" (Marine Sulpher Queen) নামক মার্কিন মালবাহী জাহাজ গায়েব হয়। তাতে ৩৮ জন সামুদ্রিক গবেষক ও প্রচুর পরিমাণে "সালফার" মজুদ ছিল। (১৪) ১৯৬৩ সালের ১ জুলাই "স্নাে বয়" (Snow Boy) নামক জাহাজ গায়েব হয়।
(১৫) ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে "ভিচক্রাফট" (Withe Craft)নামক জাহাজ গায়েব হয়। উজন ছিল বিশ হাজার টন। কর্মচারী সংখ্যা-৩২।
(১৬) ১৯৬৭ সালের মে মাসে প্রসিদ্ধ মার্কিন সাবমেরিন "স্কোরপিয়ন" (Scorpion)নিরানব্বই জন সেনাসহ গায়েব হয়।
(১৭) ১৯৭০ সালের এপ্রিল মাসে মার্কিন মালবাহী জাহাজ "মিল্টন ট্রেড" (Milton trade) গায়েব হয়। (১৮) ১৯৭৩ সালের মার্চ মাসে জার্মান মালবাহী জাহাজ "এনেটা" (Aneta)গায়েব হয়।। এগুলাে হচ্ছে প্রসিদ্ধ ঘটনা যা রেকর্ড করে রাখা হয়েছে, অন্যথায় এ তালিকা অনেক লম্বা।




No comments

Powered by Blogger.