সিংহের প্রেম। ঈশপের গল্প।
সিংহের প্রেম। ঈশপের গল্প।
সনাতন রূপ: এক সিংহ এক কৃষক মেয়ের প্রেমে পড়ে গিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্যে পাগল হয়ে গেল। মেয়ের বাবা এরকম একজন জামাইয়ের কাছে নিজের মেয়েকে দিতে অনিচ্ছুক ছিল আবার সােজাসুজি না বলে সিংহকে রাগাতেও সাহস পাচ্ছিল না। কাজেই সে অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করল, সে সিংহকে বলল, তুমি আমার মেয়ের জন্যে চমৎকার জামাই হবে কিন্তু আমার মেয়ে তােমার বড় বড় নখ এবং দাঁতকে খুব ভয় পায়। বিয়ের আগে তাই তােমার দাঁত গুলি তুলে নখগুলি কেটে ফেলা দরকার। | সিংহ এতই গভীর প্রেমে পড়েছিল যে সে সাথে সাথেই রাজী হয়ে গেল। কৃষক তখন সিংহের দাঁত গুলি তুলে আর নখ গুলি কেটে ফেলল। এখন তাকে ভয় পাবার কিছু নেই কৃষক তখন একটা মুগুর দিয়ে পিটিয়ে সিংহকে তাড়িয়ে দিল।
সুবচন: যারা না ভেবে চিন্তে প্রেমে পড়ে যায় তাদের কপালে অনেক দুঃখ।
আধুনিক রূপ: এক চেয়ারম্যানের মেয়ে রূপে গুনে অতুলনীয়া, গ্রামের কলেজে সে আই.এ.পড়ে। যেমন তার গায়ের রং সেরকম তার চেহারা, আবার পড়াশােনাতেও তার কোন জুরি নেই। শুধু তাই নয় তার গলার সুর এত চমকার যে আন্তঃজেলা সংগীত প্রতিযােগিতায় সে দ্বিতীয় স্থান দখল করে ফেলল। রূপে গুনে এরকম চমৎকার একটি মেয়ের অনেক অনুরাগী ভক্ত থাকবে বলাই বাহুল্য। কাজেই আশে পাশে কয়েক গ্রামের অনেক ছেলেরা তার প্রেমে হাবুডুবু খেতাে। সবচেয়ে বেশী যে হাবুডুবু খেতাে সে হচ্ছে একটা সিংহ। সেই সিংহ বনের ধারে জারুল গাছে হেলান দিয়ে মেয়েকে কলেজে যেতে এবং আসতে দেখে প্রত্যেকদিন বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলত। প্রেমের জ্বালা সইতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সে একদিন মেয়ের বাসায় গিয়ে হাজির। মেয়ের চেয়ারম্যান বাবা সিংহকে দেখে খুব ঘাবড়ে গেলেন, ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, কি বাবা সিংহ, আপনি কি মনে করে ? আমি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। বিয়ের প্রস্তাব। কার বিয়ে ? সিংহ কেশে গলা একটু পরিষ্কার করে বলল, আমার পরিবারে মুরুব্বী কেউ নেই তাই নিজেই আনলাম প্রস্তাবটা। আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করতে চাই চেয়ারম্যান ভিতরে ভিতরে খুব ভয় পেয়ে গেলেও বাইরে সেটা প্রকাশ করল । বলল, না না কিছু মনে করি নাই। কিন্তু কথা হল আজকাল এরা নিজেরা পছন্দ করে বিয়ে করে। তােমার মত একজন জামাইকে বিয়ে করবে বলে তাে মনে হয় না। সিংহ মুখ কাল করে বলল, কেন করবে না? মেয়ে আমার খুব কোমল স্বভাবের, কিন্তু তােমার এত বড় বড় দাত আর নখ, মনে হয় দেখেই ফিট হয়ে যাবে। তােমার দাঁত গুলি যদি তুলে ফেল আর নখগুলি যদি কেটে ফেল তবু মনে হয় একটা আশা আছে। | সিংহ প্রেমে এতই হাবুডুবু খাচ্ছিল যে সাথে সাথে রাজী হয়ে গেল, বলল, দাঁত আর নখ তাে তুচ্ছ আপনার মেয়ের জন্যে আমি প্রাণ পর্যন্ত দিতে রাজী আছি। | কিছুক্ষণের মাঝেই চেয়ারম্যান সাড়াশী, করাত হাতুড়ী ছেনী ইত্যাদি নিয়ে হাজির হল। সিংহকে চিৎ করে শুইয়ে বেশ কয়জন তাকে শক্ত করে ধরে রাখল, চেয়ারম্যান তখন সাড়াশী দিয়ে একটা একটা করে দাঁত টেনে টেনে তুলে ফেলল। তারপর কয়েকজন মিলে করাত দিয়ে নখ গুলি কেটে ব্লাদ দিয়ে ঘষে ঘষে সেগুলি ভােতা করে ফেলল।
সিংহ তখন বলল, তাহলে কি আমি এখন কাজীকে ডেকে আনব? চেয়ারম্যান একটা বড় মুগুর দিয়ে সিংহের পিছনে মেরে বলল, কাজী ? ব্যাটার সাহস তাে কম না আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায়! ভাগ এখান থেকে বেকুব কোথাকার। সিংহ হতচকিত হয়ে চেয়ারম্যানের দিকে তাকাল, ভাঙ্গা গলায় বলল, তার মানে আপনি আমার সাথে এতক্ষন মিথ্যা কথা বলেছেন? মিথ্যা নয়তাে কি ? চেয়ারম্যান চিল্কার করে বলল, কোনদিন শুনেছিস মানুষ সিংহকে বিয়ে করে ? ভাগ ব্যাটা বদমাইস - চেয়ারম্যান তখন মুগুর দিয়ে সিংহকে বেধরক পিটাতে পিটাতে বলল, দূর হ এখান থেকে। চেয়ারম্যানের দেখা দেখি তার চেলা চামুন্ডারাও লাঠিসােটা নিয়ে ছুটে এল সবাই মিলে সিংহকে পেটাতে শুরু করল। সিংহ চোখের পানি মুছে বলল, আপনার মেয়েকে যদি না পাই আমার এই জীবনের কোন অর্থ নেই। মৃত্যুই আমার কাম্য, আপনারা আমাকে মেরেই ফেলেন। | তখন সিংহ ভাঙ্গা গলায় হিন্দী সিনেমায় দেখা গান গাইতে শুরু করল, ইয়ে জিন্দেগী বরবাদ হ্যায়... | এদিকে বাড়ীর ভিতর জানালা থেকে চেয়ারম্যানের মেয়ে পুরাে ব্যাপারটা দেখছিল। হঠাৎ করে সিংহের গান শুনে তার বুকের ভিতরেও ভালবাসার বাণ ডেকে গেল। সে চিৎকার করে বলল, থাম তােমরা থাম, সিংহকে তােমরা মেরাে না। সবাই অবাক হয়ে বলল, মারব না ? না। কেন? মেয়ে তখন হিন্দী সিনেমার নায়িকাদের মত চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে দিয়ে বলল, পৃথিবীতে একমাত্র অবিনশ্বর অনুভূতি হচ্ছে ভালবাসা। খাটি ভালবাসা হচ্ছে স্বর্গীয় তার অবমাননা করা হচ্ছে সৃষ্টিকে অবমাননা করাইত্যাদি ইত্যাদি। ডায়লগ শেষ করে মেয়ে সিংহের বুকে ঝাপিয়ে পড়ল তখন সিংহ তাকে আলিঙ্গন করে দুজনে মিলে এক সাথে গান গাইতে শুরু করুল, হাম তােমারা—তােম হামারা...। | তখন বৃষ্টি শুরু হল এবং বৃষ্টির মাঝে ভিজে কাপড়ে চেয়ারম্যানের মেয়ে শরীর দুলিয়ে দুলিয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর ভঙ্গীতে নাচতে শুরু করল।
দুর্বচন: প্রেম ভালবাসার জন্যে হিন্দী সিনেমার উপরে কোন ওষুধ নেই।
সনাতন রূপ: এক সিংহ এক কৃষক মেয়ের প্রেমে পড়ে গিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্যে পাগল হয়ে গেল। মেয়ের বাবা এরকম একজন জামাইয়ের কাছে নিজের মেয়েকে দিতে অনিচ্ছুক ছিল আবার সােজাসুজি না বলে সিংহকে রাগাতেও সাহস পাচ্ছিল না। কাজেই সে অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করল, সে সিংহকে বলল, তুমি আমার মেয়ের জন্যে চমৎকার জামাই হবে কিন্তু আমার মেয়ে তােমার বড় বড় নখ এবং দাঁতকে খুব ভয় পায়। বিয়ের আগে তাই তােমার দাঁত গুলি তুলে নখগুলি কেটে ফেলা দরকার। | সিংহ এতই গভীর প্রেমে পড়েছিল যে সে সাথে সাথেই রাজী হয়ে গেল। কৃষক তখন সিংহের দাঁত গুলি তুলে আর নখ গুলি কেটে ফেলল। এখন তাকে ভয় পাবার কিছু নেই কৃষক তখন একটা মুগুর দিয়ে পিটিয়ে সিংহকে তাড়িয়ে দিল।
সুবচন: যারা না ভেবে চিন্তে প্রেমে পড়ে যায় তাদের কপালে অনেক দুঃখ।
আধুনিক রূপ: এক চেয়ারম্যানের মেয়ে রূপে গুনে অতুলনীয়া, গ্রামের কলেজে সে আই.এ.পড়ে। যেমন তার গায়ের রং সেরকম তার চেহারা, আবার পড়াশােনাতেও তার কোন জুরি নেই। শুধু তাই নয় তার গলার সুর এত চমকার যে আন্তঃজেলা সংগীত প্রতিযােগিতায় সে দ্বিতীয় স্থান দখল করে ফেলল। রূপে গুনে এরকম চমৎকার একটি মেয়ের অনেক অনুরাগী ভক্ত থাকবে বলাই বাহুল্য। কাজেই আশে পাশে কয়েক গ্রামের অনেক ছেলেরা তার প্রেমে হাবুডুবু খেতাে। সবচেয়ে বেশী যে হাবুডুবু খেতাে সে হচ্ছে একটা সিংহ। সেই সিংহ বনের ধারে জারুল গাছে হেলান দিয়ে মেয়েকে কলেজে যেতে এবং আসতে দেখে প্রত্যেকদিন বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলত। প্রেমের জ্বালা সইতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সে একদিন মেয়ের বাসায় গিয়ে হাজির। মেয়ের চেয়ারম্যান বাবা সিংহকে দেখে খুব ঘাবড়ে গেলেন, ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, কি বাবা সিংহ, আপনি কি মনে করে ? আমি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। বিয়ের প্রস্তাব। কার বিয়ে ? সিংহ কেশে গলা একটু পরিষ্কার করে বলল, আমার পরিবারে মুরুব্বী কেউ নেই তাই নিজেই আনলাম প্রস্তাবটা। আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করতে চাই চেয়ারম্যান ভিতরে ভিতরে খুব ভয় পেয়ে গেলেও বাইরে সেটা প্রকাশ করল । বলল, না না কিছু মনে করি নাই। কিন্তু কথা হল আজকাল এরা নিজেরা পছন্দ করে বিয়ে করে। তােমার মত একজন জামাইকে বিয়ে করবে বলে তাে মনে হয় না। সিংহ মুখ কাল করে বলল, কেন করবে না? মেয়ে আমার খুব কোমল স্বভাবের, কিন্তু তােমার এত বড় বড় দাত আর নখ, মনে হয় দেখেই ফিট হয়ে যাবে। তােমার দাঁত গুলি যদি তুলে ফেল আর নখগুলি যদি কেটে ফেল তবু মনে হয় একটা আশা আছে। | সিংহ প্রেমে এতই হাবুডুবু খাচ্ছিল যে সাথে সাথে রাজী হয়ে গেল, বলল, দাঁত আর নখ তাে তুচ্ছ আপনার মেয়ের জন্যে আমি প্রাণ পর্যন্ত দিতে রাজী আছি। | কিছুক্ষণের মাঝেই চেয়ারম্যান সাড়াশী, করাত হাতুড়ী ছেনী ইত্যাদি নিয়ে হাজির হল। সিংহকে চিৎ করে শুইয়ে বেশ কয়জন তাকে শক্ত করে ধরে রাখল, চেয়ারম্যান তখন সাড়াশী দিয়ে একটা একটা করে দাঁত টেনে টেনে তুলে ফেলল। তারপর কয়েকজন মিলে করাত দিয়ে নখ গুলি কেটে ব্লাদ দিয়ে ঘষে ঘষে সেগুলি ভােতা করে ফেলল।
সিংহ তখন বলল, তাহলে কি আমি এখন কাজীকে ডেকে আনব? চেয়ারম্যান একটা বড় মুগুর দিয়ে সিংহের পিছনে মেরে বলল, কাজী ? ব্যাটার সাহস তাে কম না আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায়! ভাগ এখান থেকে বেকুব কোথাকার। সিংহ হতচকিত হয়ে চেয়ারম্যানের দিকে তাকাল, ভাঙ্গা গলায় বলল, তার মানে আপনি আমার সাথে এতক্ষন মিথ্যা কথা বলেছেন? মিথ্যা নয়তাে কি ? চেয়ারম্যান চিল্কার করে বলল, কোনদিন শুনেছিস মানুষ সিংহকে বিয়ে করে ? ভাগ ব্যাটা বদমাইস - চেয়ারম্যান তখন মুগুর দিয়ে সিংহকে বেধরক পিটাতে পিটাতে বলল, দূর হ এখান থেকে। চেয়ারম্যানের দেখা দেখি তার চেলা চামুন্ডারাও লাঠিসােটা নিয়ে ছুটে এল সবাই মিলে সিংহকে পেটাতে শুরু করল। সিংহ চোখের পানি মুছে বলল, আপনার মেয়েকে যদি না পাই আমার এই জীবনের কোন অর্থ নেই। মৃত্যুই আমার কাম্য, আপনারা আমাকে মেরেই ফেলেন। | তখন সিংহ ভাঙ্গা গলায় হিন্দী সিনেমায় দেখা গান গাইতে শুরু করল, ইয়ে জিন্দেগী বরবাদ হ্যায়... | এদিকে বাড়ীর ভিতর জানালা থেকে চেয়ারম্যানের মেয়ে পুরাে ব্যাপারটা দেখছিল। হঠাৎ করে সিংহের গান শুনে তার বুকের ভিতরেও ভালবাসার বাণ ডেকে গেল। সে চিৎকার করে বলল, থাম তােমরা থাম, সিংহকে তােমরা মেরাে না। সবাই অবাক হয়ে বলল, মারব না ? না। কেন? মেয়ে তখন হিন্দী সিনেমার নায়িকাদের মত চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে দিয়ে বলল, পৃথিবীতে একমাত্র অবিনশ্বর অনুভূতি হচ্ছে ভালবাসা। খাটি ভালবাসা হচ্ছে স্বর্গীয় তার অবমাননা করা হচ্ছে সৃষ্টিকে অবমাননা করাইত্যাদি ইত্যাদি। ডায়লগ শেষ করে মেয়ে সিংহের বুকে ঝাপিয়ে পড়ল তখন সিংহ তাকে আলিঙ্গন করে দুজনে মিলে এক সাথে গান গাইতে শুরু করুল, হাম তােমারা—তােম হামারা...। | তখন বৃষ্টি শুরু হল এবং বৃষ্টির মাঝে ভিজে কাপড়ে চেয়ারম্যানের মেয়ে শরীর দুলিয়ে দুলিয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর ভঙ্গীতে নাচতে শুরু করল।
দুর্বচন: প্রেম ভালবাসার জন্যে হিন্দী সিনেমার উপরে কোন ওষুধ নেই।





No comments
Post a Comment