আদর্শ স্ত্রীর বিশেষ গুণ । স্বামীকে গুনাহ থেকে বাঁচানো।
আদর্শ স্ত্রীর বিশেষ গুণ
। স্বামীকে গুনাহ থেকে বাঁচানো।
আপন স্বামীকে সর্বপ্রকার পাপকাজ, অসত্ত্বাজ তথা সমাজবিরােধী, ইসলামবিরােধী কার্যকলাপ হতে বাঁচিয়ে রাখা প্রতিটি আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য। নিজ স্বামীকে গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখা একটি সীমাহীন গুরুত্বপূর্ন বিষয়। অথচ এ বিষয়টির প্রতি সাধারণতঃ আমাদের মুসলমান বােনেরা তেমন একটা ভ্রুক্ষেপ করেনা-যেমনটা হওয়া আবশ্যক ও বাঞ্ছনীয়। নিজ প্রাণপ্রিয় স্বামীকে স্বীয় অবয়ব, রূপ-লাবণ্য, সৌন্দর্য, সাজ-গােজ ও পােশাক-পরিচ্ছদ দ্বারা নিজের প্রতি সদা আকৃষ্ট করে আপন বানিয়ে ধরে রাখার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আজ শূন্যের কোঠায় অথবা তার কাছাকাছি। অথচ এর ক্ষয়-ক্ষতির বােঝার পরিমাণ কম হেক, বেশী হেক স্ত্রীদেরই বহন করতে হয়। | আদর্শ স্ত্রীরা বা গৃহবধূর তাে সেই মুসলিম নারী, যাদেরকে আল্লাহ তা'আলা তাদের স্বামীদের পােশাক এবং স্বামীদেরকে তাদের পােশাক সাব্যস্ত করেছেন। এর মূল হেতু কি? পােশাক-পরিচ্ছদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মহা উদ্দেশ্য তাে লজ্জাস্থান আবৃত করা। অন্য আরাে একটি উদ্দেশ্য হল, সৌন্দর্য বর্ধন। যেমনিভাবে পােশাক মানুষের দেহাবয়বকে আবৃত করে নেয়, তেমনিভাবে স্ত্রীগণও সাজ-সজ্জা, রূপ পরিচর্যা ও সৌন্দর্যের মাধ্যমে স্বীয় স্বামীদের জন্য নিজদেরকে সজ্জিত করে তাদের দৃষ্টি ও মনকে নিজেদের পানে আকৃষ্ট করে তাদের পরিচ্ছদ হয়ে তাদেরকে প্রেমভালবাসার বাহু ডােরে বেঁধে তাদের বৈধ মনােবাঞ্ছা, কামনা-বাসনা পূর্ণ করার কেন্দ্রমূল বানিয়ে নেয়। আর যেমনিভাবে পােশাক-পরিচ্ছদের ভিতর মানুষ খােলা-মেলা দেখায় না এবং তারা লােকচক্ষুর সম্মুখে থাকে আবৃত, তেমনিভাবে পথিবীবাসীদের সম্মুখে স্বামীর ইজ্জত-আব্রু ও সন্ত্রম সংরক্ষিত থাকে, যদিও স্ত্রী স্বীয় স্বামীর সর্বপ্রকার গেপনীয়তা সম্পর্কে অবগত আছে।
কোন কিছুই স্ত্রীর নিকট গােপন থাকে না। স্ত্রী যদি স্বামীর উদ্দেশ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয় এবং গৃহাভ্যন্তরে স্বামীর সম্মুখে মেথরাণী, ঝাড়ুদারনী আর কাজের বুয়ার মত এমন বেঙ্গা, অপরিচ্ছন্ন পােশাকে আগােছােলা চুলে ঘুরাঘুরি করে যে, স্বামীর দৃষ্টি তার প্রতি আকৃষ্ট হয় না, স্বামীর মন তার দিকে বেঁকে না, বরং তার দৃষ্টি প্রতিবেশীর স্ত্রীর প্রতি অথবা পথে-ঘাটে, অফিস-আদালতে অন্যের স্ত্রীর প্রতি আকৃষ্ট হয়, আর পথভ্রান্ত হয়ে পাপে লিপ্ত হয়, তাহলে এর দুঃখজনক দায়-দায়িত্ব স্ত্রীর উপরও অবশ্যই বর্তাবে। তাই ঘরের স্ত্রীর জন্য এমন রূপচর্চা করে সেজে-গুজে, পরিপাটি হয়ে নিজেকে স্বামীর সম্মুখে উপস্থাপন করা আবশ্যক, যেন স্বামীর দৃষ্টি একমাত্র তার উপরই নিবদ্ধ থাকে। তখন বিউটি পার্লারে ডিউটি দিয়ে রূপচর্চাকারীনীদের কৃত্রিম রূপের ঝলকেও স্বামীর মন ও দৃষ্টি তাদের প্রতি ঝুঁকবে না। তাই মুসলমান ভগ্নীদের প্রতি আকুল আবেদন-তােমরা স্বামীর নিমিত্ত স্বীয় সত্তা, ব্যক্তিত্ব, পােশাক-পরিচ্ছদ ও সাজ-সজ্জা এমন আকর্ষণীয় পন্থায় করবে, যেন প্রাণপ্রিয় স্বামীর হৃদয়রাজ্যে তুমি একাই রাজত্ব করতে পার। ইসলামের বৈধ সাজ-সজ্জা, রূপচর্চা করতে নিষেধ নেই। বৈধ সাজ-সজ্জা না করে স্বামীর অন্তরে ঘৃণার বীজ বপন করা নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক ছাড়া আর কি?
স্বামীর মন জয় করতে পারাই স্ত্রীর স্বার্থকতা। লক্ষণীয় ও স্মরণীয় বিষয় এই যে, তােমার সামান্য ক্ষেপ, সামান্য সাজ-সজ্জা, রূপচর্চা স্বামীকে বড় বড় গুনাহ হতে বাঁচাতে পারে। স্বামীকে তুমি নিজের দিকে ধাবিত করে তাঁর বড় বড় পেরেশানী দূরিভূত করে দিতে পার। | অসংখ্য মহিলাদের অভিযােগ এই যে, “আমার স্বামী আমাকে ভালবাসে ।” “আমার খোঁজ-খবর নেয়না।” “আমার কোন কথার মূল্যায়ন করে না” “শাশুড়ী ও ননদদের পরামর্শ অনুযায়ী চলে” “তাদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আমার সন্তানদেরও আদর করে না” “অফিস বা দোকান থেকে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেই সামান্য ব্যাপারে ধমকাতে থাকে, শাসাতে থাকে ............. ইত্যাদি।
মনে রাখবে, এ সকল অভিযােগের চিকিৎসা ও তদবীর হল, তােমার গৃহে প্রসাধনী সামগ্রী যৎসামান্য যা কিছু রয়েছে, তা দ্বারা নিজেকে সাদামাটা করে হলেও সজ্জিত করে রাখবে। আল্লাহ তা'আলা আপন মেহেরবানী দ্বারা তােমাকে যতটুকু সৌন্দর্য ও রূপ দান করেছেন, তার শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা আদায় করতঃ বৈধ সাজ-সজ্জার মাধ্যমে স্বামীকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা চালাবে। তখন স্বামীর দৃষ্টিতে দেখতে তুমি সুন্দরীদের মতই লাগবে। এটা কিন্তু পরীক্ষিত প্রেসকিপশন। আর তুমি যখন প্রাণপ্রিয়। স্বামীর দৃষ্টিতে প্রিয়তমারূপে, তার হৃদয় গভীরে হৃদয়রাজ্যের রাণীরূপে আসন গ্রহণ করতে পারবে, তখন তােমার সমস্ত অভিযােগ, সমস্ত দুশ্চিন্তা নিজে নিজেই দূর হয়ে যাবে। তখন তােমার স্বামী তােমার আবেদননিবেদন এমনকি আদেশও মানবে, বড় বড় দোষ-ক্রটিও ক্ষমাসুন দেখতে থাকবে। তােমার বিরুদ্ধে কারাে কথায় কানও দিবে না। কারণ, তুমি এখন তার প্রিয়তমা। পৃথবীর আনত নয়না সুন্দরী থেকে সুন্দরী রমণীগণ তােমার স্বামীর দৃষ্টি ও মনকে প্রতারণার ধুম্রজালে ফাঁসাতে পারবে । তাই স্বামীর জন্য সাজ-সজ্জার পন্থা অবলম্বন করবে। অন্যথায় বিরহ ব্যাথার করুণ সুর বাজতে থাকবে অহর্নিশি তােমার অন্তরের গভীরে। তখন কিছুই থাকবে না ক্রন্দন ও আহাজারী করা ব্যতীত । রূপচর্চার মাধ্যমে জীবনসঙ্গীকে সন্তুষ্ট রাখতে সদা চেষ্টা করবে। সর্বদা চিন্তামুক্ত হয়ে সুখে থাকতে পারবে। মুসলীম ভগ্নীগণ! স্মরণ রাখবে, যদি অফিসে অথবা স্কুলে কিংবা কোম্পানী বা মিল-কারখানায় কোন সহকর্মী সুন্দরী রমণী মুহাব্বত ভরা মিষ্টি কণ্ঠে তােমার অসন্তুষ্ট স্বামীকে শুধু এতটুকু বলে যে, স্যার! আজ আপনাকে বেশ চিন্তিত-বিষন্ন লাগছে। বাড়ীতে কোন অসুবিদা হয়েছে, স্যার?
সুন্দরী রমণীর মধুমাখা কণ্ঠের এ ছােট্ট প্রশ্নটুকু বিবাহিত পুরুষের পাথরসম পাষাণ হৃদয়কে মােমের মত বিগলিত করতে এবং তাকে আকৃষ্ট ও ভ্রান্ত করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে; বরং তা তােমার ভারাক্রান্ত, ব্যথিত স্বামীকে পাপকর্মে প্ররােচিত বা প্রলুব্ধ করতে আহ্বায়ক ও সহায়ক হবে। এমনিভাবে বাস স্টপে অপেক্ষমান মেকআপ মাখা কোন বারবণিতার প্রেমে পড়ে তােমার স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ অথবা ব্যভিচারে লিপ্ত হতে পারে। যখন মেকআপ মাখা মুখের কৃত্রিম সৌন্দর্যে মাতওয়ারা হয়ে তােমার স্বামী বেগানা নারীর আতিথেয়তা গ্রহণ করে প্রতারিত হবে, তখন তােমার সুন্দর সাজানাে গৃহ রূপান্তরিত হবে জাহান্নামের অতল গহ্বরে। পক্ষান্তরে যদি তুমি নিজেকে ঘরের মাসী বা চাকরাণির মত অপরিষ্কার বদনে ও পােশাকে অপরিচ্ছন্ন না রাখ, বরং সাজ-সজ্জা ও মিষ্টি মধুর আচরণের মাধ্যমে স্বামীর হৃদয়কে জয় করে নিতে পার, তাহলে নিশ্চিতরূপে একথা বলা যেতে পারে যে, স্বামী কস্মিনকালেও কোন প্রকার পেরেশানী বা পাপকর্মে লিপ্ত হবে না।
আমরা দৃঢ়তার সাথে ও সহস্র পুরুষের অভিজ্ঞতার আলােকে আদর্শ স্ত্রী ও গৃহবধূদের উপদেশ প্রদান করা সমাচীন জ্ঞান করছি যে, স্ত্রী নিজ স্বামীর গৃহে পরিচ্ছন্ন না থাকা, নিজ অবয়বকে স্বামীর জন্য সজ্জিত না। করা, স্বামীর দৃষ্টিতে নিজেকে অপরূপ সুন্দরীরূপে উপস্থাপন না করা, মিষ্টি-মধূর আচরণ, অমায়িক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রিয়তমকে আকৃষ্ট না করা স্বামী-স্ত্রী উভয়কে অসংখ্য দুশ্চিন্তার মধ্যে পতিত হতে বাধ্য করে। সুতরাং তুমি এটা প্রাণপন চেষ্টা করবে যে, তােমার স্বামী যখনই তােমার মুখ পানে দৃষ্টিপাত করবে, তখন যেন তােমার সাজ-সজ্জায় বিমােহিত হয়ে তার দৃষ্টি দ্বারা মুহাব্বতের বৃষ্টিপাত হয়। বিশেষ করে প্রতিবারেই যেন তুমি নতুন বউ অনুমেয় হও, সেরূপ রূপচর্চা করে পরিপাটি হয়ে গৃহিণীর দায়িত্ব পালন করবে। ইনশাআল্লাহ! তােমার অসংখ্য, অগণিত পেরেশানি ও অভিযােগ দূর হয়ে যাবে। আর তােমার স্বামী হয়ে যাবে তােমার অতি অন্তরঙ্গ বন্ধু। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন : “নেক স্ত্রীর নিদর্শন হচ্ছে- যখন স্বামী তার দিকে তাকায়, তখন সে ভালবাসার দ্বারা স্বামীকে সন্তুষ্ট করে।”
আপন স্বামীকে সর্বপ্রকার পাপকাজ, অসত্ত্বাজ তথা সমাজবিরােধী, ইসলামবিরােধী কার্যকলাপ হতে বাঁচিয়ে রাখা প্রতিটি আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য। নিজ স্বামীকে গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখা একটি সীমাহীন গুরুত্বপূর্ন বিষয়। অথচ এ বিষয়টির প্রতি সাধারণতঃ আমাদের মুসলমান বােনেরা তেমন একটা ভ্রুক্ষেপ করেনা-যেমনটা হওয়া আবশ্যক ও বাঞ্ছনীয়। নিজ প্রাণপ্রিয় স্বামীকে স্বীয় অবয়ব, রূপ-লাবণ্য, সৌন্দর্য, সাজ-গােজ ও পােশাক-পরিচ্ছদ দ্বারা নিজের প্রতি সদা আকৃষ্ট করে আপন বানিয়ে ধরে রাখার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আজ শূন্যের কোঠায় অথবা তার কাছাকাছি। অথচ এর ক্ষয়-ক্ষতির বােঝার পরিমাণ কম হেক, বেশী হেক স্ত্রীদেরই বহন করতে হয়। | আদর্শ স্ত্রীরা বা গৃহবধূর তাে সেই মুসলিম নারী, যাদেরকে আল্লাহ তা'আলা তাদের স্বামীদের পােশাক এবং স্বামীদেরকে তাদের পােশাক সাব্যস্ত করেছেন। এর মূল হেতু কি? পােশাক-পরিচ্ছদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মহা উদ্দেশ্য তাে লজ্জাস্থান আবৃত করা। অন্য আরাে একটি উদ্দেশ্য হল, সৌন্দর্য বর্ধন। যেমনিভাবে পােশাক মানুষের দেহাবয়বকে আবৃত করে নেয়, তেমনিভাবে স্ত্রীগণও সাজ-সজ্জা, রূপ পরিচর্যা ও সৌন্দর্যের মাধ্যমে স্বীয় স্বামীদের জন্য নিজদেরকে সজ্জিত করে তাদের দৃষ্টি ও মনকে নিজেদের পানে আকৃষ্ট করে তাদের পরিচ্ছদ হয়ে তাদেরকে প্রেমভালবাসার বাহু ডােরে বেঁধে তাদের বৈধ মনােবাঞ্ছা, কামনা-বাসনা পূর্ণ করার কেন্দ্রমূল বানিয়ে নেয়। আর যেমনিভাবে পােশাক-পরিচ্ছদের ভিতর মানুষ খােলা-মেলা দেখায় না এবং তারা লােকচক্ষুর সম্মুখে থাকে আবৃত, তেমনিভাবে পথিবীবাসীদের সম্মুখে স্বামীর ইজ্জত-আব্রু ও সন্ত্রম সংরক্ষিত থাকে, যদিও স্ত্রী স্বীয় স্বামীর সর্বপ্রকার গেপনীয়তা সম্পর্কে অবগত আছে।
কোন কিছুই স্ত্রীর নিকট গােপন থাকে না। স্ত্রী যদি স্বামীর উদ্দেশ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয় এবং গৃহাভ্যন্তরে স্বামীর সম্মুখে মেথরাণী, ঝাড়ুদারনী আর কাজের বুয়ার মত এমন বেঙ্গা, অপরিচ্ছন্ন পােশাকে আগােছােলা চুলে ঘুরাঘুরি করে যে, স্বামীর দৃষ্টি তার প্রতি আকৃষ্ট হয় না, স্বামীর মন তার দিকে বেঁকে না, বরং তার দৃষ্টি প্রতিবেশীর স্ত্রীর প্রতি অথবা পথে-ঘাটে, অফিস-আদালতে অন্যের স্ত্রীর প্রতি আকৃষ্ট হয়, আর পথভ্রান্ত হয়ে পাপে লিপ্ত হয়, তাহলে এর দুঃখজনক দায়-দায়িত্ব স্ত্রীর উপরও অবশ্যই বর্তাবে। তাই ঘরের স্ত্রীর জন্য এমন রূপচর্চা করে সেজে-গুজে, পরিপাটি হয়ে নিজেকে স্বামীর সম্মুখে উপস্থাপন করা আবশ্যক, যেন স্বামীর দৃষ্টি একমাত্র তার উপরই নিবদ্ধ থাকে। তখন বিউটি পার্লারে ডিউটি দিয়ে রূপচর্চাকারীনীদের কৃত্রিম রূপের ঝলকেও স্বামীর মন ও দৃষ্টি তাদের প্রতি ঝুঁকবে না। তাই মুসলমান ভগ্নীদের প্রতি আকুল আবেদন-তােমরা স্বামীর নিমিত্ত স্বীয় সত্তা, ব্যক্তিত্ব, পােশাক-পরিচ্ছদ ও সাজ-সজ্জা এমন আকর্ষণীয় পন্থায় করবে, যেন প্রাণপ্রিয় স্বামীর হৃদয়রাজ্যে তুমি একাই রাজত্ব করতে পার। ইসলামের বৈধ সাজ-সজ্জা, রূপচর্চা করতে নিষেধ নেই। বৈধ সাজ-সজ্জা না করে স্বামীর অন্তরে ঘৃণার বীজ বপন করা নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক ছাড়া আর কি?
স্বামীর মন জয় করতে পারাই স্ত্রীর স্বার্থকতা। লক্ষণীয় ও স্মরণীয় বিষয় এই যে, তােমার সামান্য ক্ষেপ, সামান্য সাজ-সজ্জা, রূপচর্চা স্বামীকে বড় বড় গুনাহ হতে বাঁচাতে পারে। স্বামীকে তুমি নিজের দিকে ধাবিত করে তাঁর বড় বড় পেরেশানী দূরিভূত করে দিতে পার। | অসংখ্য মহিলাদের অভিযােগ এই যে, “আমার স্বামী আমাকে ভালবাসে ।” “আমার খোঁজ-খবর নেয়না।” “আমার কোন কথার মূল্যায়ন করে না” “শাশুড়ী ও ননদদের পরামর্শ অনুযায়ী চলে” “তাদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আমার সন্তানদেরও আদর করে না” “অফিস বা দোকান থেকে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেই সামান্য ব্যাপারে ধমকাতে থাকে, শাসাতে থাকে ............. ইত্যাদি।
মনে রাখবে, এ সকল অভিযােগের চিকিৎসা ও তদবীর হল, তােমার গৃহে প্রসাধনী সামগ্রী যৎসামান্য যা কিছু রয়েছে, তা দ্বারা নিজেকে সাদামাটা করে হলেও সজ্জিত করে রাখবে। আল্লাহ তা'আলা আপন মেহেরবানী দ্বারা তােমাকে যতটুকু সৌন্দর্য ও রূপ দান করেছেন, তার শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা আদায় করতঃ বৈধ সাজ-সজ্জার মাধ্যমে স্বামীকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা চালাবে। তখন স্বামীর দৃষ্টিতে দেখতে তুমি সুন্দরীদের মতই লাগবে। এটা কিন্তু পরীক্ষিত প্রেসকিপশন। আর তুমি যখন প্রাণপ্রিয়। স্বামীর দৃষ্টিতে প্রিয়তমারূপে, তার হৃদয় গভীরে হৃদয়রাজ্যের রাণীরূপে আসন গ্রহণ করতে পারবে, তখন তােমার সমস্ত অভিযােগ, সমস্ত দুশ্চিন্তা নিজে নিজেই দূর হয়ে যাবে। তখন তােমার স্বামী তােমার আবেদননিবেদন এমনকি আদেশও মানবে, বড় বড় দোষ-ক্রটিও ক্ষমাসুন দেখতে থাকবে। তােমার বিরুদ্ধে কারাে কথায় কানও দিবে না। কারণ, তুমি এখন তার প্রিয়তমা। পৃথবীর আনত নয়না সুন্দরী থেকে সুন্দরী রমণীগণ তােমার স্বামীর দৃষ্টি ও মনকে প্রতারণার ধুম্রজালে ফাঁসাতে পারবে । তাই স্বামীর জন্য সাজ-সজ্জার পন্থা অবলম্বন করবে। অন্যথায় বিরহ ব্যাথার করুণ সুর বাজতে থাকবে অহর্নিশি তােমার অন্তরের গভীরে। তখন কিছুই থাকবে না ক্রন্দন ও আহাজারী করা ব্যতীত । রূপচর্চার মাধ্যমে জীবনসঙ্গীকে সন্তুষ্ট রাখতে সদা চেষ্টা করবে। সর্বদা চিন্তামুক্ত হয়ে সুখে থাকতে পারবে। মুসলীম ভগ্নীগণ! স্মরণ রাখবে, যদি অফিসে অথবা স্কুলে কিংবা কোম্পানী বা মিল-কারখানায় কোন সহকর্মী সুন্দরী রমণী মুহাব্বত ভরা মিষ্টি কণ্ঠে তােমার অসন্তুষ্ট স্বামীকে শুধু এতটুকু বলে যে, স্যার! আজ আপনাকে বেশ চিন্তিত-বিষন্ন লাগছে। বাড়ীতে কোন অসুবিদা হয়েছে, স্যার?
সুন্দরী রমণীর মধুমাখা কণ্ঠের এ ছােট্ট প্রশ্নটুকু বিবাহিত পুরুষের পাথরসম পাষাণ হৃদয়কে মােমের মত বিগলিত করতে এবং তাকে আকৃষ্ট ও ভ্রান্ত করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে; বরং তা তােমার ভারাক্রান্ত, ব্যথিত স্বামীকে পাপকর্মে প্ররােচিত বা প্রলুব্ধ করতে আহ্বায়ক ও সহায়ক হবে। এমনিভাবে বাস স্টপে অপেক্ষমান মেকআপ মাখা কোন বারবণিতার প্রেমে পড়ে তােমার স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ অথবা ব্যভিচারে লিপ্ত হতে পারে। যখন মেকআপ মাখা মুখের কৃত্রিম সৌন্দর্যে মাতওয়ারা হয়ে তােমার স্বামী বেগানা নারীর আতিথেয়তা গ্রহণ করে প্রতারিত হবে, তখন তােমার সুন্দর সাজানাে গৃহ রূপান্তরিত হবে জাহান্নামের অতল গহ্বরে। পক্ষান্তরে যদি তুমি নিজেকে ঘরের মাসী বা চাকরাণির মত অপরিষ্কার বদনে ও পােশাকে অপরিচ্ছন্ন না রাখ, বরং সাজ-সজ্জা ও মিষ্টি মধুর আচরণের মাধ্যমে স্বামীর হৃদয়কে জয় করে নিতে পার, তাহলে নিশ্চিতরূপে একথা বলা যেতে পারে যে, স্বামী কস্মিনকালেও কোন প্রকার পেরেশানী বা পাপকর্মে লিপ্ত হবে না।
আমরা দৃঢ়তার সাথে ও সহস্র পুরুষের অভিজ্ঞতার আলােকে আদর্শ স্ত্রী ও গৃহবধূদের উপদেশ প্রদান করা সমাচীন জ্ঞান করছি যে, স্ত্রী নিজ স্বামীর গৃহে পরিচ্ছন্ন না থাকা, নিজ অবয়বকে স্বামীর জন্য সজ্জিত না। করা, স্বামীর দৃষ্টিতে নিজেকে অপরূপ সুন্দরীরূপে উপস্থাপন না করা, মিষ্টি-মধূর আচরণ, অমায়িক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রিয়তমকে আকৃষ্ট না করা স্বামী-স্ত্রী উভয়কে অসংখ্য দুশ্চিন্তার মধ্যে পতিত হতে বাধ্য করে। সুতরাং তুমি এটা প্রাণপন চেষ্টা করবে যে, তােমার স্বামী যখনই তােমার মুখ পানে দৃষ্টিপাত করবে, তখন যেন তােমার সাজ-সজ্জায় বিমােহিত হয়ে তার দৃষ্টি দ্বারা মুহাব্বতের বৃষ্টিপাত হয়। বিশেষ করে প্রতিবারেই যেন তুমি নতুন বউ অনুমেয় হও, সেরূপ রূপচর্চা করে পরিপাটি হয়ে গৃহিণীর দায়িত্ব পালন করবে। ইনশাআল্লাহ! তােমার অসংখ্য, অগণিত পেরেশানি ও অভিযােগ দূর হয়ে যাবে। আর তােমার স্বামী হয়ে যাবে তােমার অতি অন্তরঙ্গ বন্ধু। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন : “নেক স্ত্রীর নিদর্শন হচ্ছে- যখন স্বামী তার দিকে তাকায়, তখন সে ভালবাসার দ্বারা স্বামীকে সন্তুষ্ট করে।”





No comments
Post a Comment