ads

শয়তানী সমুদ্রের অবস্থান কোথায়?




বারমুডার ট্রাইএঙ্গেলের ব্যাপারে তাে সারা পৃথিবী জুড়েই নানানরকম তথ্য লেখা হচ্ছে এবং সব মানুষের কাছেই এ ব্যাপারে সাধারণ জ্ঞান বিদ্যমান। কিন্তু বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের মতই রহস্যময় ও ভয়ানক সব ঘটনাবলীর কেন্দ্রস্থল জাপানের ড্রাগন ট্রাইএঙ্গেল তথা শয়তানী সমুদ্রের ব্যাপারে অবগত ব্যক্তিদের সংখ্যা খুবই কম। জাপানের জনসাধারণের এ ব্যাপারে খুব ভাল করেই জানা এবং ওখানকার লােকদের উপর এথেকে দূরে অবস্থান করার সরকারী আদেশ এখন পর্যন্ত জারী। কিন্তু জাপানবহির্বিশ্বের লােকেরা এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানেনা। অথচ বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের মত এখানেও সামুদ্রিক জাহাজ, সাবমেরিন ও উড়ন্ত জাহাজ গায়েব হওয়ার ঘটনা অজস্র সংখ্যায় ঘটে আসছে। বরং গবেষকদের ধারণা, এখানকার গায়েব হওয়ার ঘটনা বারমুডা থেকেও বেশি। এখানেও যুগের অত্যাধুনিক আর সর্বাধিক দক্ষ ব্যক্তি এবং পরিপক্ক পাইলটদের গায়েব করা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে, এখানে গায়েব করা সামুদ্রিক জাহাজগুলির তালিকায় এমন সব জাহাজও বিদ্যমান যেগুলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ধ্বংসাত্মক রাসায়ণিক পদার্থ বিদ্যমান ছিল।




                             শয়তানী সমুদ্রের অবস্থান




 এ এলাকা Pacific Ocean তথা প্রশান্ত মহাসাগর এরিয়ায় জাপান এবং ফিলিপাইনের সীমান্তে অবস্থিত। এ ট্রাইএঙ্গেল জাপানের উপকূলীয় শহর (Yokohama) "য়ােকোহামা" থেকে ফিলিপাইনের (guam) "গুয়াম" দ্বীপ পর্যন্ত এবং "গুয়াম" থেকে আবার জাপানের "মারিয়ানা" দ্বীপ পর্যন্ত এবং "মারিয়ানা" থেকে "য়ােকোহামা" পর্যন্ত বিস্তৃত সামুদ্রিক এলাকা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা "মারিয়ানা" দ্বীপ আয়ত্ব করে নিয়েছিল। জাপানীরা এ এলাকাকে তাদের ভাষায় (ma-na Umi) বলে, যার অর্থ "শয়তানের সমুদ্র"। বারমুডা এবং শয়তানী ট্রাইএঙ্গেলের ব্যাপারে গবেষণাকারীদের মধ্যে চার্লস ব্রিাস হচ্ছেন অন্যতম। তিনি "দি ড্রাগন ট্রাইএঙ্গেল" নামক গ্রন্থে লিখেন : "১৯৫২ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত ঐ এলাকায় জাপান সরকারের বড় বড় পাঁচটি সৈন্যবাহী জাহাজ গায়েব হয়েছে। সেনাবাহিনী গুম হয়েছে ৭০০ (সাতশত)-এরও উপরে। এ ঘটনার রহস্য যাচাই করার জন্য তখন জাপান সরকার একটি অত্যাধুনিক জাহাজে করে একশরও বেশি গবেষকদের এক তদন্ত টিম প্রেরণ করে। কিন্তু শয়তানী সমুদ্রের রহস্য উন্মােচন করতে গিয়ে উনারাই রহস্যের চাদরে ঢাকা পড়ে গেছেন। এর পর থেকে জাপান সরকার ঐ এলাকাকে ভয়ানক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে দেয়।" 



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সামুদ্রিক যুদ্ধে জাপানকে তার পাঁচটি জঙ্গি বিমান ওখানে গায়েব হওয়ার খবর শুনতে হয়েছে। এছাড়াও ৩৪০ টি জঙ্গি বিমান, ১০ টি যুদ্ধজাহাজ, ১০ টি নৌযান, ৯ টি স্পীডবুট এবং আরাে ৪০০ টি জঙ্গি ফাইটার ঐ এলাকায় ধ্বংস হয়েছে। যুদ্ধের সময় আপনি বলতে পারেন যে, শত্রুবাহিনী কর্তৃক এগুলাে ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু ঐ সকল ঘটনা সম্পর্কে আপনি কি বলবেন, যেগুলাে ঐ এলাকায় কোন দুর্ঘটনা ছাড়াই অদৃশ্য হয়েছে, অথচ সেখানে না কোন বৃটেনের যুদ্ধ জাহাজ পৌছেছিল না কোন মার্কিন সেনাবাহিনী। গবেষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এগুলাে কোন শত্রুবাহিনীর হাতে ধ্বংস হয়নি। কেননা এক গবেষকের বক্তব্য : "It is extremely doubtful that they were sunken by enemy action because they were in home waters and there were no British or American ships in these waters during the beginning of the war". অর্থাৎ এ কথা অত্যন্ত সন্দেহপূর্ণ যে, এ জাহাজগুলি শত্রুদের হাতে ধ্বংস হয়েছে। কেননা জাহাজগুলি সামুদ্রিক সীমানার ভিতরেই অবস্থান করছিল এবং যুদ্ধের প্রারম্ভিক পর্যায়ে ওখানে কোন মার্কিন বা বৃটিশ জাহাজ পৌছেছিল না।" তাহলে কি আমরা বলতে পারিনা যে, এ এলাকায় অন্য কোন গােপন শক্তি বিদ্যমান ছিল, যারা ঐ সময় আমেরিকা এবং তার সমর্থনকারীদেরকে বিজয়ী দেখতে চেয়েছিল। বারমুডা এবং শয়তানী ট্রাইএঙ্গেলের ব্যাপারে এতগুলি সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনা ঘটার পরও কি আমরা এ কথা মানতে পারি যে, এগুলাে শুধুই ঘটনাক্রমে হয়েছে ???!! কখনাে নয়!! প্রসিদ্ধ গবেষক চার্লস ব্রিল্টার্স বলেন : "The mysterious disappearances in the Bermuda and Dragon Triangles may not be coincidental; since both areas are so similar, the same phenomenon might be behind the lost ships and planes" অর্থাৎ বারমুডা এবং শয়তানী সমুদ্রে রহস্যময় অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ঘটনাবলী ঘটনাক্রমে বা এমনিতেই হতে পারেনা। কারণ, উভয় এলাকা সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনার জন্ম দিয়েছে। জাহাজ এবং বিমান গায়েব করার ক্ষেত্রে উভয় এলাকা একই পথ বেছে নিয়েছে। (দি ড্রাগন ট্রাইএঙ্গেল-চার্লস ব্রিন্টার্স)

No comments

Powered by Blogger.